আমার ফুটবল কাহিনী
টাইম সিলেট ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:০৪:১৯,অপরাহ্ন ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | সংবাদটি ৬২০ বার পঠিত
ইদানিং বেশ নস্টালজিক হয়ে পড়ি। নির্ঘাত বয়স বাড়ার লক্ষণ! ফুটবলের সাথে আমারও যে ছোটখাটো একটা ইতিহাস রয়েছে সেটা প্রায় ভুলেই গিয়েছিলাম। আজ হঠাৎ করে মনে পড়ে গেল!
একেবারে অঁজ পাড়াগাঁয়ে আমাদের বেড়ে ওঠা। ছোট বেলা বনবাদাড় আর মাঠেঘাটে ঘুরে বেড়ানোর অবাধ স্বাধীনতা ছিল। শুধু নিজের ভাইবোন না, আশপাশ এলাকার সমবয়সীদের মধ্যে দুরন্তপনায় তুলনাবিহীন ছিলাম! কথাটা অবশ্য আমার নয়, আম্মার ভাষ্য।
আহ! সে কি আনন্দের জীবন! প্রত্যুষে ঘুম থেকে ওঠেই ছোট চাচার (ক্কারী চাচা) মক্তবে পড়তে যাওয়া আর সন্ধ্যার পরে আম্মার কাছে প্রাথমিক শিক্ষার মহড়া ছাড়া সারাদিন যেন নাটাই ছেঁড়া ঘুড়ি!
ইচ্ছেমতোই উড়ি!
খাবার সময়টুকু বাদ দিলে বাকি সময় আম গাছ, জাম গাছের ডালে ডালে চড়া আর বাড়ির সামনের পুকুরে সাঁতার কাটা। বিকেল হলেই বড়দের ফুটবল খেলার মাঠের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা। ইস! একবার যদি বাতাস ভরা বলটা পা দিয়ে লাথি মারা বা নিতান্ত হাত দিয়ে ধরার সুযোগ মেলে! আর সুযোগ না পেলেই বা কি! গাছে তো জাম্বুরার অভাব ছিল না। ২/১টা পেড়ে নিয়ে মাঠের পাশেই আমরা জুনিয়র টিমের খেলা শুরু করে দিতাম!
জাম্বুরা দিয়ে কত আর খেলা যায়! একদিন হঠাৎ করেই ধৈর্যচ্যুতি ঘটে। বল দখলের জন্য একেবারে মাঠেই ঢুকে গেলাম, কিন্তু বিধি বাম! এক বড় ভাইয়ের সাথে বেমক্কা ধাক্কা খেয়ে প্রপাত ধরণীতল! দমে গেলে চলবে কেন! লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়ালাম। কিন্তু একি! বাম হাত দেখি কনুই আর কব্জির মাঝ খান থেকে ভাঁজ হয়ে ঝুলে আছে! সবাই এ ওর মুখের দিকে তাকাচ্ছে। হঠাৎ বড় ভাইয়া এসে চিৎকার করে উঠলেন,
– আরে! হাত তো ভেঙ্গে গেছে।
আর যায় কোথা! এতক্ষণে যেন সমস্ত ব্যথা বেদনা এসে ভর করলো। ভয়ের চোটে প্রতিরোধের দেয়াল খান খান হয়ে ভেঙে পড়লো। নিশ্চিন্তে জ্ঞান হারালাম!
সেই হাত পুরোপুরি ভালো হতে মাস ছয়েক সময় লেগেছিল, যদিও দাগটা আজও আছে। তবে ঐসময় আমার কদর খুব বেড়ে গিয়েছিল। মোটামুটি রাজার হালেই ছিলাম। কষ্ট আর দুশ্চিন্তা সব তো আম্মা আর আব্বার উপর দিয়েই গেল।
ফুটবলের সাথে আমার আর কোনদিন সখ্যতা গড়ে ওঠেনি!
শামছুল ইসলাম,ফেসবুক থেকে কপি