মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে ফায়দা হাসিলের চেষ্টা
টাইম ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১:১০:৩৭,অপরাহ্ন ১৫ আগস্ট ২০২০ | সংবাদটি ৩২০ বার পঠিতমুক্তিযোদ্ধা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্বের পরিচয় দেওয়া জাতির এ সূর্যসন্তানদের প্রতি মানুষের রয়েছে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার অনুভূতি। এ শ্রদ্ধারা জায়গাটিকে কাজে লাগাতে অনেকেই নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিচ্ছেন। মুক্তিযোদ্ধা বা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন স্থানে ভূমি আত্মসাৎ জালিয়াতি কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে কিছু কুচক্রীমহল। এমনই একটি অভিযোগ, দক্ষিণ সুরমার তুরণ মিয়ার বিরুদ্ধে। অন্যের জায়গা দখলের পাঁয়তারা করে মামলা থেকে বাঁচতে সিলেটের ডিআইজি বরাবরে আবেদন করেছিলেন মোহাম্মদ তুরন মিয়া। সেই আবেদন নিয়ে তৈরি হয়েছে বিপত্তি। সিলেটের মুক্তিযোদ্ধারা ক্ষেপেছেন ওই আবেদন দেখে।
আবেদনে দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দি ইউনিয়নের চান্দাই মাঝ পাড়ার মৃত আব্দুস শহীদ এর ছেলে মোহাম্মদ তুরন মিয়া উল্লেখ করেন তার বাবা ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা। আব্দুস শহীদের নামের সাথে মুক্তিযুদ্ধা দেখে চমকে যান সিলেটের মুক্তিযোদ্ধারা। ২৯ জুলাই দুপুরে সিলেট জেলা মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের নেতৃবৃন্দ বসেন বৈঠকে। পরে তারা সাংবাদিকদের জানান, দক্ষিণ সুরমার চান্দাই এলাকায় আব্দুস শহীদ নামে কোনো মুক্তিযুদ্ধা নেই। মৃত আব্দুন নুরের ছেলে মৃত আব্দুল মুকিত ও নানু মিয়া নামে ছাড়া দক্ষিণ সুরমার চান্দাই গ্রামে আর কোনো মুক্তিযোদ্ধা নাই বলে উল্লেখ্য করা হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধা অ্যাডভোকেট রফিকুল হক, আব্দুল মছব্বির, তৈয়ব আলী, ইলিয়াস মিয়া, ইসরাইল মিয়া, আব্দুস শহীদ খান প্রমুখ। গত ২ জুলাই মো. তুরন মিয়া ডিআইজি বরাবরে মামলা থেকে বাঁচতে নিজেকে মুক্তিযুদ্ধার ছেলে বলে দাবি করেন। ওই বৈঠক থেকে তুরন মিয়াকে ফোন করে বলা হয়েছিল যে মৃত আব্দুস শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন বলে কোনো প্রমাণ থাকলে বলার জন্য অপারগত স্বীকার করেন। এসময় তুরন মিয়া জানান তার কাছে কোনো ডকুমেন্টস নেই।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চান্দাই গ্রামের কয়েকজন লোক জানান মুক্তিযোদ্ধার সন্তান পরিচয়ে তুরন মিয়া এলাকায় অন্যের জমি নিজের নামে হাতিয়ে নিতে তৎপর রয়েছেন। এলাকায় প্রভাব বিস্তারে রয়েছে তুরন মিয়ার নানা কৌশল। তিনি কখনও রাজনৈতিক পরিচয় আবার প্রশাসনের বিভিন্নস্তরে মুক্তিযুদ্ধার সন্তান পরিচয় দিয়ে প্রবাসীদের জায়গা দখলের পাঁয়তারা করছেন। উদ্দেশ্য একটাই- জায়গার মালিকের কাছ থেকে কিছু টাকা হাতিয়ে নেয়া।
আলাপকালে মো. তুরন মিয়া জানান তার পিতা আনসার কমান্ডার হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। মুক্তিযোদ্ধার তালিকার তার পিতার নাম নেই কেন-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানে মুক্তিযোদ্ধাদের মেরে ফেলা হয়েছিল। সেই ভয় থেকে তার পিতা মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম লিখাননি।
এ ব্যাপারে বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট রফিকুল হক বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে আনসার বাহিনীতে ছিলেন আব্দুস শহিদ। তিনি মুক্তিযোদ্ধা নন। মুক্তিযোদ্ধা প্রমাণের পক্ষে তার কোনো কাগজপত্র নেই।
সূত্র-একাত্তরের কথা