নিরাপত্তা শঙ্কায় মেয়র আরিফ

টাইম সিলেট ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ২:৪৯:২৭,অপরাহ্ন ১৮ মে ২০২৩ | সংবাদটি ১২৫ বার পঠিতনিরাপত্তা শঙ্কায় ভুগছেন সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। সিটি নির্বাচনের আগে কেন তার সঙ্গে এমনটি করা হচ্ছে এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মেয়র আরিফ। জানান- ‘আমাকে জনগণ থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ কারণেই আমার সঙ্গে অন পেমেন্টে থাকা আনসার সদস্যদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে।’ গতকাল বিকালে সিলেট সিটি করপোরেশনের হলরুমে জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে মেয়র আরিফ এ শঙ্কার কথা জানান। বলেন- ‘আমি নির্বাচন করবো কি না, এখনো স্পষ্ট করিনি। যা বলার আগামী ২০ তারিখেই বলবো। এখনো আমি নগরের মেয়র। সরকারের অংশ। কিন্তু আগে-ভাগে না জানিয়ে হঠাৎ করে আনসার সদস্যদের সরিয়ে নেয়ার বিষয়টি রহস্যজনক। নির্বাচনকে সামনে রেখে এসব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।’ ২০১৩ সালে সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরানকে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরী।
পরে ২০১৮ সালে তিনি দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করে জয়লাভ করেন। প্রায় ১০ বছরের জনপ্রতিনিধি মেয়র আরিফকে প্রথমবার নির্বাচনের পর নিরাপত্তার জন্য দু’জন গানম্যান নিয়োগ দেয়া হয়েছিলো।
পরে সেই গানম্যান প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছিল। প্রায় ৬ বছর আগে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সিটি করপোরেশনের স্থাপনা, মেয়রের নিরাপত্তার জন্য আনসার সদস্য আনেন। এরপর থেকে সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি মেয়রের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও বাসার নিজস্ব অফিসের নিরাপত্তায় আনসার সদস্যদের ব্যবহার করছিলেন। নগরে যাতায়াতকালে মেয়র আরিফ তার পেছনের গাড়িতে আনসার সদস্যদের সঙ্গে রাখতেন। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে হঠাৎ করে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর বাসার নিজস্ব অফিসের দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যদের প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। এ নিয়ে রাতেই শঙ্কিত হয়ে পড়েন মেয়র আরিফ। রাতে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তবে- এ ব্যাপারে আনসার ও ভিডিপি’র জেলা কমান্ড্যান্ট আলী রেজা রাব্বি মানবজমিনকে জানিয়েছেন- ‘আমরা কারো বাসা থেকে আনসার সদস্যদের সরিয়ে নেইনি।
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে আমরা কেবল সিলেটে কর্মরত আনসার সদস্যদের জন্য একটি নোটিশ দিয়েছি যে- যেসব জায়গায় দায়িত্ব পালনের কথা রয়েছে সেসব জায়গায় যেনো তারা দায়িত্ব পালন করেন। যেসব জায়গা দায়িত্ব পালনের অনুমতি নেই, সেসব জায়গায় যেন আনসার সদস্যরা না থাকেন। সেটি জেনারেলাইজড নোটিশ।’ তিনি জানান- ‘এই নোটিশে প্রেক্ষিতে দেখা গেছে মেয়রের বাসায় থাকা আনসার সদস্যরা থাকতে পারেন না, তারা হয়তো চলে এসেছেন। সিলেট সিটি করপোরেশন ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আনসার সদস্যদের নিয়োজিত থাকার অনুমতি থাকায় কেবল তারা ওইসব জায়গায় দায়িত্ব পালন করবেন। অন্য কোথাও নয়।’ জেলা কমান্ড্যান্ট জানান- মেয়র আরিফ যদি এখন তার বাসা কিংবা ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য আনসার সদস্য চান তাহলে তাকে আবেদন করতে হবে। এই আবেদন আমরা ঢাকায় পাঠাবো।
অনুমোদিত হয়ে এলে এরপর আনসার সদস্যদের দেয়া হবে।’ তবে আনসারের জেলা কমান্ডারের বক্তব্যকে খণ্ডন করে মেয়র আরিফ জানিয়েছেন- ‘৬ বছর ধরে আনসার সদস্য আমার নিরাপত্তায় রয়েছে। এই ৬ বছর কিছুই হলো না। সিটি নির্বাচনকে সামনে রেখে কেন সরিয়ে নেয়া হলো। এটি শুধু মেয়র নয়, নগরের মানুষের সঙ্গে তামাশা বলেও উল্লেখ করেন মেয়র।’ সিটি করপোরেশনে প্রেস ব্রিফিংয়ে মেয়র জানিয়েছেন- ‘এবারের সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে নানা ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। আগে থেকেই পরিবেশকে ঘোলাটে করে তোলা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে তার সঙ্গে থাকা আনসার সদস্যদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে। সৌজন্যতার খাতিরে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিষয়টি আগে জানানোর প্রয়োজন অনুভব করেননি। না বলেই রাতের আঁধারে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। আনসারের জেলা কমান্ডার নতুন যোগদান করেই এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে জানান তিনি।’
আরিফ বলেন- ‘সিটি করপোরেশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যথাযথ নীতিমালা মেনে নির্দিষ্ট মাসোহারার বিনিময়ে জেলা আনসার ও ভিডিপি কার্যালয়ের মাধ্যমে সিটি কর্তৃপক্ষ আনসার সদস্যদের নিয়োগ দেয়। নিয়োগের পর থেকে পাঁচজন আনসার সদস্য আমার ব্যক্তিগত ও বাসার নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। কিন্তু কোনো নোটিশ ছাড়াই রাতে আমার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে। সিটি নির্বাচন সামনে রেখে আমাকে হয়রানি করতেই উদ্দেশ্যমূলকভাবে এটা করা হয়েছে। আমি এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’