সিলেট ৪আসনে গ্যাস সংযোগ চাই মাননীয় মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি
টাইম সিলেট ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:০৬:৫৯,অপরাহ্ন ০৯ জুলাই ২০২০ | সংবাদটি ৭২৪ বার পঠিতহাসান আহমদ চৌঃ গোয়াইনঘাট প্রতিনিধিঃ
সিলেটের হরিপুর গ্যাস ক্ষেত্র আবিস্কার হওয়ার ৬৫ বছর অতিবাহিত হয়ে গেছে। কিন্ত সিলেট ৪আসনে এখনো গ্যাস সংযোগ থেকে ববঞ্চিত। বিষয়টি এমন যে,চেয়ে দেখ হাত দিওনা জলে যাবে।
জানা যায়, ১৮৮৩ সালে বৃটিশ সরকার এ দেশে রেলওয়ে লাইন করতে গিয়ে তেল এবং গ্যাস অনুসন্ধানের চিন্তাভাবনা করে। সেই লক্ষ্যে ১৯১১ সালে আসাম রয়েল কোম্পানি এদেশে তেল গ্যাস অনুসন্ধান শুরু করে।সারা দেশে ৬৬ টি কূপ পেলে ও সঠিকভাবে তারা তেলের সন্ধান করতে পারেনি।১৯৫৫ সালে বার্মা ওয়েল কোম্পানি সর্বপ্রথম সিলেটের হরিপুরে গ্যাসক্ষেত্র আবিস্কার করে।
সেখান থেকে ১৯৫৬ সালে বাংলাদেশের একমাত্র গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন কার্যক্রম শুরু করে। ১৯৫৭ সালে পাকিস্তান পেট্রোলিয়াম লিমিটেড (পিপিএল ) সিলেটের হরিপুর থেকে সর্বপ্রথম গ্যাস উত্তোলন করে। ১৯৮৬ সালের ২৪ শে ডিসেম্বর বৃহত্তর জৈন্তিয়ার গোয়াইনঘাট এর হরিপুরে দেশের একমাত্র তেল খনি আবিষ্কৃত হয়।তৎকালিন সময়ে হরিপুর গোয়াইনঘাট উপজেলার অংশ ছিল।
সিলেট সদরের বটেশ্বর ক্যান্টনমেন্ট এর কাছাকাছি গোয়াইনঘাট উপজেলার সীমান্ত ছিল। নতুন উপজেলা কোম্পানিগঞ্জ সৃষ্টি করতে এবং জৈন্তাপুর উপজেলার আয়তন বৃদ্ধি করতে গোয়াইনঘাট এর বিশাল অংশ জৈন্তাপুর ও কোম্পানিগঞ্জ উপজেলায় চলে যায়। সেই সুবাদে হরিপুর গ্যাস ক্ষেত্র এখন জৈন্তাপুর উপজেলায়।কিন্তু মুলত এটা এক সময়ের গোয়াইনঘাটের অংশ। তবে সব মিলিয়ে এটা বৃহত্তর জৈন্তিয়ার অংশ।
তথ্য মতে, সিলেটের গ্যাস সর্বপ্রথম ঢাকা এবং চট্রগ্রামে বাণিজ্যিক উদ্যেশ্য সরবরাহ করা হয়।১৯৬৮ সালে ঢাকায় আবাসিক এলাকায় রান্নার জন্য গ্যাস সরবরাহ সংযোগ করা হলেও তখন পর্যন্ত সিলেট গ্যাস সংযোগ থেকে বঞ্চিত ছিল।
১৯৭৭ সালে বাংলাদেশের সাবেক সফল অর্থমন্ত্রী মরহুম এম সাইফুর রহমান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এর সরকারে যোগদান করলে, তিনি সিলেটে গ্যাস সংযোগের জন্য জোর দাবী জানান।এম সাইফুর রহমানের জোরালো ভুমিকার ফলে ১৯৭৮ সালের ১লা জানুয়ারি পেট্রোবাংলার ব্যবস্থাপনায় হযরত শাহজালাল (র) এর মাজারে গ্যাস সংযোগের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক ভাবে সিলেটে গ্যাস সংযোগের যাত্রা সুচিত হয়। ১৯৫৯ সালে ছাতকে গ্যাস ক্ষেত্র আবিস্কার হয়।
১৯৬২ সালে ছাতক পেপার ফেক্টরিতে গ্যাস সংযোগ দিলেও ১৯৮৭ সালে আবাসিক গ্যাস সংযোগ সরবরাহ হয়। ফেঞ্চুগঞ্জ-এ গ্যাসক্ষেত্র আবিস্কার হয় ১৯৮৮ সালে। গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয় ১৯৬৬ সালে।
গোলাপগঞ্জে গ্যাসক্ষেত্র আবিস্কার হয় ১৯৮১ সালে সংযোগ দেওয়া হয় ১৯৮৬ সালে।এছাড়া সিলেটের বিভিন্ন স্থানে গ্যাস সংযোগ সরবরাহ করা হয়,।
যেমন -সুনামগঞ্জে-১৯৮৩,মৌলভীবাজার -১৯৮৫, শ্রীমঙ্গল -১৯৮৬,বিয়ানীবাজার -১৯৯৮, কুলাউড়া-১৯৯৫,মাধবপুর -১৯৯০, সিলেট সদর ও দক্ষিণ সুরমা ১৯৭৮ সালে।বর্তমানে সিলেট জেলার জৈন্তাপুরের হরিপুর এলাকায় গ্যাস সংযোগ থাকলেও গোয়াইনঘাট এবং কোম্পানিগঞ্জ উপজেলায় এখনো গ্যাস লাইন দেওয়া হয়নি।
১৯৫৫ সাল থেকে ২০২০। ৬৫ বছর চলে গেলেও স্থানীয় নিজ এলাকায় গ্যাস সংযোগ নেই।
গ্যাস ক্ষেত্র আবিস্কার ও উত্তোলন! অথচ এখন পর্যন্ত সিলেট ৪আসনের লোকজন গ্যাস সরবরাহ পায় নি। বৃহত্তর জৈন্তিয়ার মানুষ তাদের নায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত। অথচ এই গ্যাস উত্তোলন করা হয় তাদের বুক চিরে।
ফতেপুর ও বাংলাবাজার এলাকার জনগণ বলেন, ভাবতে অবাক লাগে। কিশোরগঞ্জ, আজমেরিগঞ্জের মত হাওরাঞ্চলে গ্যাস সংযোগ হয়। কিন্তু হরিপুর থেকে গোয়াইনঘাট-জৈন্তাপুর ও কোম্পানিগঞ্জ মাত্র ৩৬/৪০ কিলোমিটার ব্যবধান। তবুও এই এলাকায় গ্যাস সংযোগ নেই।
বৃটিশ আমল থেকে স্বাধীনতার আগ পর্যন্ত এই এলাকা থেকে নির্বাচিত ছিলেন মরহুম মকবুল হোসেন এম এল এ,মরহুম ফয়জুল হাসান এম এল এ, মরহুম ছয়ফুল আলম এমপি। স্বাধীনতার পরে ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন মরহুম হাবিবুর রহমান তোতা উকিল ,১৯৭৯ সালে বিএনপি থেকে নাজিম কামরান চৌধুরী, ১৯৮৬ সালে আওয়ামীলীগ থেকে ইমরান আহমদ, এরপর বিএনপি থেকে দিলদার হোসেন সেলিম এবং অদ্যাবধি ৮ বারের সংসদ সদস্য ইমরান আহমদ এমপি বর্তমান সরকারের প্রভাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের মাননীয় মন্ত্রী।তাহলে আমরা কেন গ্যাস সংযোগ থেকে বঞ্চিত থাকব?
আমাদের দাবি, আজকে যারা দায়ীত্বশীল হিসেবে রয়েছেন,কিংবা অতীতে যারা সমাজের কর্তা ছিলেন অথবা এই আসন থেকে বার বার নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্রীয় দায়ীত্ব পালন করেছেন। এখনো কেন আমরা গ্যাস সংযোগ থেকে বঞ্চিত হব।
তাই মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় জনাব ইমরান আহমদ এমপি সাহেবের কাছে সিলেট ৪আসনের জনগণের পক্ষ থেকে আবেদন জানাচ্ছি আপনার সততা ও উন্নয়নের ধারাবাহীক সফলতা আজ জনগণের হাতের নাগালে পৌঁছে গেছে।তাই সিলেট ৪আসনে গ্যাস সংযোগ দিয়ে জনগণের মণিকোঠায় স্থান করে নিবেন।আমরা সিলেট ৪আসনের জনগণ আপনার কাছে চির কৃতঞ্জ থাকব।