সিলেটে বন্যার মধ্যে কন্যা আনতে ঘাড় চেপে বর

টাইম ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:০৬:০৮,অপরাহ্ন ১৪ জুলাই ২০১৯ | সংবাদটি ৪৮৫ বার পঠিতসিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় আকস্মিক বন্যা। কয়েক দিনের ভারি বর্ষণ। আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলার নদী-নালা, খাল-বিল পানিতে টুই-টম্বুর। উপজেলার অনেক মানুষ হয়ে পড়েছেন পানি বন্দি। অনেকেই ঘর থেকে রাস্তায় বেরোতে পারছেন না।
বৈরি আবহাওয়ার কারণে থেমে নেই সামাজিক নানা আচার-অনুষ্ঠান। পূর্ব নির্ধারিত এসকল অনুষ্ঠান সফল করতে হচ্ছে বন্যার পানি মাড়িয়ে। অনেক সময় কনেকে আনতে বরদেরকে যেতে হচ্ছে কারো ঘাড়ে চেপে বা কলা গাছের তৈরি ভেলায় করে। এমনই একটি বিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছে সিলেটের জৈন্তাপুরে। একজনের কাঁধে চড়ে বর যাচ্ছেন কনের বাড়িতে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ধরনের একটি ছবি ভাইরাল হয় শুক্রবার দুপুরের পর থেকেই। এখন ছবি নিয়ে চলছে নানা আলোচনা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট উজানীনগর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে রুবেল আহমদের সঙ্গে বিয়ের দিন ধার্য হয় শুক্রবার। তারিখ অনুযায়ী বরও কনেকে আনতে যান যথাসময়ে। কিন্তু বৈরী আবহাওয়া কিছুটা উৎসব ব্যাহত করলেও শেষ পর্যন্ত দমাতে পারেনি বিয়ের অনুষ্ঠান। বেশ কয়েকজন বরযাত্রী নিয়ে কনের বাড়ি জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট মেঘলি গ্রামের রজব আলীর মেয়ে শামিমা বেগমকে আনতে রওয়ানা দেন রুবেল মিয়া ও তার সঙ্গে থাকা বরযাত্রীরা। এসময় বর পক্ষের সঙ্গি ছিলেন নিজপাট ইউপির ৩নং ওয়ার্ডের জন নন্দিত ইউপি সদস্য হুমায়ুন কবির খান।
বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময় বর ভিজে যাবেন, তাই বর রুবেলকে নিজ কাধে তুলে নেন হুমায়ুন। তার এমন মহানুভবতা দেখে অনেকেই তাকে সাধুবাদও জানান। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর রুবেল আহমদ কিছুটা শারিরীক প্রতিবন্ধী। আর এ কারণেই তিনি নিজ উদ্যোগেই এটি করেন বলে অন্য বর যাত্রীরা জৈন্তাপুর উপজেলার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
অবিরাম বৃষ্টির ফলে জৈন্তাপুর উপজেলার জনজীবন বির্পযস্থ। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের অনেক এলাকার মানুষের বাড়িঘরে বানের পানি প্রবেশ করেছে। অনেক এলাকায় গ্রামীণ রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। জনসাধারণকে নৌকা ও কলার গাছের তৈরি ভেলায় চড়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। বন্যায় নিজপাট, জৈন্তাপুর, চারিকাটা, দরবস্ত ও ফতেহপুর ইউনিয়নের বেশির ভাগ গ্রামে পানি প্রবেশ করে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।