যাঁর অস্থিভস্ম রয়েছে চাঁদের মাটিতে
টাইম ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:২৯:০৯,অপরাহ্ন ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | সংবাদটি ৬৪৩ বার পঠিতইনিই একমাত্র, যাঁর অস্থিভস্ম রয়েছে চাঁদের মাটিতে
(১) ১৯৪৮ সালে, উনিশ বছর বয়সে গ্র্যাজুয়েশন। ১৯৪২ সালে শুমেকার পরিবার আবার ফিরে আসে লস অ্যাঞ্জেলসে। সেখানে ফেয়ারফ্যাক্স হাই স্কুল থেকে ইউজিন ষোলো বছর বয়সে শেষ করলেন হাই স্কুলের পাঠ। ১৯৪৪-এ ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে ভর্তি হলেন তিনি।
(২) ১৯৫১ সালে বন্ধু রিচার্ডের বোন ক্যারোলিনকে বিবাহ করেন ইউজিন। ভূতত্ত্ব নিয়ে তাঁর আলোচনা শুনেই আকৃষ্ট হন ক্যারোলিন। বলেছিলেন, নীরস বিষয়ের প্রতি আগ্রহ জেগেছিল ইউজিনের প্রাঞ্জল ব্যাখ্যা শুনেই।
(৩) বিয়ের পরে সংসার এবং তিন সন্তান নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন ক্যারোলিন। সন্তানরা বড় যাওয়ার পরে স্বামীর পরামর্শেই অ্যাস্ট্রোনমি নিয়ে পড়াশোনা। কঠোর অধ্যবসায়ের জেরে একান্ন বছর বয়সে ক্যারোলিন নতুন করে পথ চলা শুরু করেন প্ল্যানেটরি অ্যাস্ট্রোনমার হিসেবে। তিনি এখনও কাজ করে চলেছেন।
(৪) ইউজিন ও ক্যারোলিনের যৌথ গবেষণায় আবিষ্কৃত হয়েছিল ৭১টি ধূমকেতু এবং ৮০০ গ্রহাণু। বিশ্বের ইতিহাসে এই আবিষ্কার বিরল ও নজিরবিহীন। বন্ধু বিজ্ঞানী ডেভি, স্ত্রী ক্যারোলিনের সঙ্গে গবেষণায় ১৯৯৩ সালে একটি ধূমকেতু আবিষ্কার করেন ইউজিন। তার নামকরণ হয় শুমেকার লেভি-৯।
(৫) পৃথিবী জুড়ে নতুন করে আলোচিত হয় বিজ্ঞানী শুমেকারের নাম। ইউজিন শুমেকারের পূর্বাভাস ছিল, এই ধূমকেতু খুব তাড়াতাড়ি আছড়ে পড়বে বৃহস্পতি গ্রহে। তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী সত্যি প্রমাণিত হয় ১৯৯৪ সালের ১৬ জুলাই।
(৬) প্রথমবার পৃথিবী থেকে যাঁরা চাঁদের মাটিতে পা রাখবেন, তাঁদের মধ্যে থাকবেন তিনিও। নাসার অ্যাপোলো-১১ মিশনের সঙ্গে সরাসরি ভাবে যুক্ত ছিলেন ইউজিন। প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন হবু মহাকাশচারীদের। চাঁদে প্রথম মানুষ পৌঁছনোর অভিযানে তিনিও ছিলেন সম্ভাব্য অভিযাত্রী। তিনি নিজেও জানতেন।
(৭) ১৯৬৯-এর ২০ জুলাই নাসা-র কার্যালয়ে বসে বাইরে থেকেই চাঁদের পিঠে মানুষের প্রথম পদচারণা দেখেছিলেন অভিযানের অন্যতম হোতা ইউজিন শুমেকার। কিন্তু তাঁর সব স্বপ্ন চুরমার হয়ে গিয়েছিল অ্যাডিসন ডিজিজে। অ্যাড্রিনালিন গ্রন্থির এই অসুখের জন্য তিনি মনোনীত হননি চন্দ্র অভিযানের অভিযাত্রী হিসেবে।
(৮) আধারে লেখা ছিল, নাম, জন্ম ও মৃ্ত্যুতারিখ এবং ‘রোমিও জুলিয়েট’-এর একটি অংশ। ১৯৯৮ সালে চাঁদের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিল নাসা-র লুনার প্রসপেক্টর। সেই মহাকাশযানেই একটি পলি কার্বোনেটের ক্যাপসুলে পিতলের আধারে রাখা হয় ইউজিনের চিতাভস্ম।
(৯) এই পরম আশ্রয় থেকে কেউ তাঁকে অন্য কোথাও সরাতে পারবে না। নশ্বর দেহে চাঁদে পৌঁছতে পারেননি। কিন্তু পৃথিবী থেকে একমাত্র তিনিই চিরঘুমে ঘুমিয়ে আছেন চাঁদের মাটিতে।