পর্যটন বান্ধব সমাজ গঠনে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে …….. উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী
লিডিং ইউনিভার্সিটিতে বিশ্ব পর্যটন দিবস উদ্যাপন
টাইম সিলেট ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:১৫:০২,অপরাহ্ন ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | সংবাদটি ৫৯৩ বার পঠিত
সিলেটের প্রথম বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় লিডিং ইউনিভার্সিটি বিশ্ব পর্যটন দিবস ২০১৯ উদ্যাপন করেছে।
এ উপলক্ষে দুইদিনব্যাপী কর্মসূচীর মধ্যে বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গন থেকে উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করে লিডিং ইউনিভার্সিটির ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীরা। র্যালী শেষে বিশ্ব পর্যটন দিবস আয়োজিত পর্যটন মেলার উদ্বোধন করে অতিথিবৃন্দসহ উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী পর্যটন মেলায় অংশগ্রহণকারী সিলেটের ১২টি ট্রাভেল এন্ড ট্যুরিজম প্রতিষ্ঠানের স্টল ঘুরে দেখেন। এসময় সিলেট প্রেস ক্লাবের সভাপতি ইকরামুল কবির এবং লিডিং ইউনিভার্সিটির শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষাথীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
দ্বিতীয় পর্বে সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যালারি- ০১ এ সিলেটে পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনা- শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। লিডিং ইউনিভার্সিটির ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান মো. মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী, গেস্ট অব অনার হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার বনমালী ভৌমিক, বিশেষ অতিথি হিসেবে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য সৈয়দ আব্দুল হাই, স্থাপত্য বিভাগের প্রফেসর ও শুকতারা রিসোর্ট এর স্বত্বাধিকারী স্থপতি সৈয়দা জেরিনা হোসেন, সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট আবু তাহের মোহাম্মদ সুয়েব এবং বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট পুলিশ সিলেট জুনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার একেএম মোশারফ হোসেন এর পক্ষে পুলিশ পরিদর্শক মো. আব্দর নূর উপস্থিত ছিলেন।
সিলেটে পর্যটন শিল্পের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে এবং পর্যটন শিল্পে ডিজিটাল প্রযু্িক্তর ব্যবহার প্রসারী করতে হবে উল্লেখ করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য কামরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, পর্যটন শিল্পে উদ্যোক্তা তৈরী করতে হবে এবং আগামী প্রজন্মের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। বর্তমান সরকার পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে যে সকল পদক্ষেপ নিয়েছেন তার সাথে সম্পৃক্ত হয়ে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে এবং পর্যটন বান্ধব সমাজ গঠন করতে হবে। তিনি বলেন, সিলেটে পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে হলে পর্যটকদের সাথে বন্ধুত্বসূলভ আচরণ করতে হবে, মনে রাখতে হবে তারা খুশি হলে ভ্রমন শেষে অন্যদেরকেও তারা এখানে আসতে উৎসাহ দিবেন। এভাবেই পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটানো সম্ভব। লিডিং ইউনিভার্সিটির ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ পর্যটন শিল্পে কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দক্ষ জনশক্তি তৈরী করছে যা সিলেটসহ বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সন্মানিত অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার বনমালী ভৌমিক বলেন, পর্যটন শিল্পে সম্ভাবনা তখনই বাস্তবায়ন হবে যখন পর্যটকদের জন্য সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা যাবে। পর্যটক স্পটসমূহে সুব্যবস্থাপনা, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং নিরাপত্তা প্রদানসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে। মনে রাখতে হবে, ‘তারা আমাদের অতিথি এবং আমাদেরকে অতিথি পরায়ন হতে হবে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে লিডিং ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এর সদস্য সৈয়দ আব্দুল হাই বলেন, পর্যটন স্পট হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে সিলেটের একটা পরিচিতি রয়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যটকরা সিলেটসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন যায়গায় আসছেন। সেই জন্য এখন সিলেটে পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনার তৈরী হয়েছে।
সিলেটের শুকতারা রিসোর্ট এর স্বত্বাধিকারী এবং লিডিং ইউনিভার্সিটির আর্কিটেক্চার বিভাগের অধ্যাপক স্থপতি জেরিনা হোসেন বলেন, বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পের অগ্রগতি হয়েছে, আয়ও বেড়েছে। ভৌগলিক কারণে পর্যটন শিল্পে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বা বিশেষ জায়গা সিলেট। তবে সিলেটে পর্যটকদের জন্য যে তথ্য প্রদান ডেস্ক রয়েছে তা অপ্রতুল এবং যেগুলো রয়েছে তাদেরকে আরও সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে।
সিলেটে পর্যটন শিল্পে বিকাশ হবে আশাবাদ ব্যক্ত করে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর নবনির্বাচিত সভাপতি আবু তাহের মোহাম্মদ সুয়েব বলেন, সিলেটে অনেক ব্যবসা এখন সংকুচিত হতে চলছে। সেই জন্য সিলেটকে ইকোনোমিক জোন করে গড়ে তুলতে হবে। শুধু শহরকেন্দ্রিক উন্নয়ন করলে হবে না, গ্রামসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলসমূহ উন্নয়নের আওতায় আনতে হবে। তিনি বলেন, সিলেটে পর্যটন শিল্পে কর্মসংস্থানের অনেক সুযোগ রয়েছে আর এই সুযোগের জন্য লিডিং ইউনিভার্সিটির ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ দক্ষ অভিজ্ঞ জনবল তৈরী করছে।
বাংলাদেশ পর্যটন পুলিশ সিলেট জুনের পরিদর্শক মো. আব্দুর নূর বলেন, সিলেটে আমাদের পুলিশ ক্যাম্প রয়েছে যেখানে আমরা স্বেচ্চাসেবি হিসেবে কাজ করে থাকি। পর্যটকদের সেবা প্রদান করার জন্য আমরা প্রশিক্ষিণ প্রাপ্ত।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন লিডিং ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার মেজর (অব.) মো. শাহ আলম, পিএসসি।
সভাপতির বক্তব্যে লিডিং ইউনিভার্সিটির ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান মো. মাহবুবুর রহমান পর্যটন মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানসমূহকে ধন্যবাদ জানিয়ে আগামীতে আরও সুপরিষরে বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে সিলেটে পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে সম্মিলিতভাবে কাজ করে যাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বিশ্ব পর্যটন দিবসে এ অনুষ্ঠানে আসার জন্য আমন্ত্রিত অতিথিসহ সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন শিক্ষার্থী মো. আদীব বিন আব্দুল ওয়াহিদ এবং শাহ নুশরাত জাহান সাদিয়া। অনুষ্ঠানমালার সহযোগীতায় ছিল লিডিং ইউনিভার্সিটি ট্যুরিস্ট ক্লাব।
দুদিনব্যাপী এ পর্যটন মেলায় সিলেটের ১২টি ট্রাভেল এন্ড ট্যুরিজম প্রতিষ্ঠানের স্টল শুক্রবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মোক্ত থাকবে। অনুষ্ঠানে লিডিং ইউনিভার্সিটির কলা ও আধুনিক ভাষা অনুষদের ডীন প্রফেসর নাসির উদ্দিন আহমেদ, বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা এবং পর্যটন মেলায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।