যে কারণে সিলেট বিএনপিতে আতঙ্ক
টাইম সিলেট ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:০৬:৩৯,অপরাহ্ন ১০ মে ২০২৩ | সংবাদটি ১৩৫ বার পঠিতহঠাৎ করেই সিলেট ছাত্রদলের তোড়জোড়। বিগত ক’বছর সিলেটে ছাত্রদল নিশ্চুপ ছিল। কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে ফের সরব হয়ে ওঠেন নেতারা। এদিকে- সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচনও সামনে। এই অবস্থায় ছাত্রদলের হঠাৎ কার্যক্রমে বাধা
দেয় পুলিশ। ২রা মে নগরের চৌহাট্টা এলাকায় হয় ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়া। এতে পুলিশ মামলা করে কোতোয়ালি থানায়। এসল্ট মামলায় প্রায় দ্ইুশ’ নেতাকর্মী আসামি। শুরু হয় ধরপাকড়। গতকাল পর্যন্ত সিলেটে বিএনপি সহ অঙ্গ সংগঠনের ১৯ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী।
তিনি জানিয়েছেন- গতকাল দুপুরে আদালত থেকে বের হওয়ার সময় ছাত্রদলের এক কর্মীকে ডিবি পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। তাকে বিকাল পর্যন্ত কোথাও হস্তান্তর করা হয়নি। তিনি জানান- সিলেট বিএনপিতে গ্রেপ্তার আতঙ্ক বিরাজ করছে। প্রতিরাতেই মহানগরের ৬ থানায় অধিভুক্ত এলাকাগুলোর কোথা না কোথাও নেতাকর্মীদের বাড়িতে পুলিশ যাচ্ছে।
অথবা বাসার সামনে গিয়ে চলে আসছে। দু’দিন আগে সিলেট মহানগর বিএনপি’র সিনিয়র নেতা সালেহ আহমদ খসরু’র সাপ্লাই এলাকার বাসার সামনে পুলিশের টহল ছিল। এছাড়া- এর আগে আরও কয়েকজন নেতাকর্মীর বাড়িতে গিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। এতে করে নগর এলাকার বহু নেতাকর্মী পালিয়ে বেড়াচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। সিলেট জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী জানিয়েছেন- মামলার গ্রাউন্ড নিয়ে প্রশ্ন আছে। পুলিশ অতি উৎসাহী হয়ে মামলা দায়ের করেছে। আর এ মামলায় গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। তিনি জানান- গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ১৩ জনের ৫ দিন করে সিলেটের মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট ৩য় আদালতে রিমান্ড চেয়েছিল পুলিশ। গতকাল শুনানিতে আমরা অংশ নেই। আদালত বিএনপি নেতা শামীম সহ ১৩ জনের ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। তিনি বলেন- আদালতে রিমান্ড শুনানি শেষে আসামি থাকা বিএনপি’র ১৩ নেতাকর্মীকে কোতোয়ালি থানা পুলিশ তাদের হেফাজতে নিয়েছে। এদিকে- বিএনপি’র নেতাকর্মীদের অযথা হয়রানি না করতে সোমবার বিকালে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ইলিয়াছ শরীফের সঙ্গে দেখা করেন সিলেট বিএনপি’র ৫ নেতা। এরা হচ্ছেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, মহানগর সভাপতি নাসিম হোসাইন, জেলা সভাপতি আব্দুল কাইয়ূম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী ও মহানগর সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী।
প্রায় এক ঘণ্টা তারা পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠককালে সাম্প্রতিক বিষয় উপস্থাপন করেন কেন্দ্রীয় নেতা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির। ব্যাপক ধরপাকড় ও মামলা নিয়ে তিনি পুলিশ কমিশনারকে অবগত করেন। এ সময় খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির পুলিশ কমিশনারকে জানান- আসন্ন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি কোনো প্রার্থী দিচ্ছে না। এটা বিএনপি’র কেন্দ্র থেকেই ইতিমধ্যে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না তবু সিলেটে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে ধরপাকড় করা হচ্ছে। এতে অনেক নেতাই বাড়িঘরে থাকতে পারছেন না। মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তারা অতি উৎসাহী হয়ে এটা করতে পারে। তিনি পুলিশ কমিশনারের কাছে ধরপাকড় বন্ধ করার দাবি জানান। এদিকে- পুলিশ কমিশনার বিএনপি’র নেতাকর্মীদের কথা শুনেন এবং বিষয়টি দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেন। জেলা ও মহানগর বিএনপি’র নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন- পুলিশ কমিশনারের বক্তব্যের পর বাড়ি বাড়ি তল্লাশি বন্ধ হলেও গতকাল আদালত এলাকা থেকে বের হওয়ার সময় ডিবি পুলিশ একজনকে আটক করেছে। এতে করে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র ও বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরী গতকালও গ্রেপ্তার এবং তল্লাশির বিষয়ে জানিয়েছেন- সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করতে এই ধরপাকড় চালানো হচ্ছে। এজন্য তিনি পুলিশের অতি উৎসাহী ভূমিকাকে দায়ী করেন। এতে সিলেটের রাজনৈতিক সম্প্রীতি বিনষ্ট হচ্ছে বলে জানান তিনি।
জকিগঞ্জে বিএনপি’র ৭২ নেতাকর্মীর মুক্তি দাবি: কুমিল্লার একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরীফ রাখাকে কেন্দ্র করে জকিগঞ্জের একটি ভিত্তিহীন মামলায় জকিগঞ্জ উজেলার বিএনপি সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রায় ৭২ জন নেতাকর্মী আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে অভিলম্বে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহার ও কারাগারে থাকা নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছেন সিলেট জেলা বিএনপি’র সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন- একটি ধর্মীয় অনুভূতিকে কেন্দ্র করে একটি মিথ্যা মামলা দায়েরের পর ইতিমধ্যে অনেকে দীর্ঘদিন জেল খেটে মুক্ত হয়েছে। এখন নতুন করে ৭২ জনকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সিলেট জেলা বিএনপি’র নেতৃবৃন্দ অভিলম্বে কারাগারে থাকা বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের সকল নেতাকর্মীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।