তাওয়াফের সময় হাজিরা যে দোয়াগুলো বেশি পড়বেন
টাইম ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২:৩৭:৪৮,অপরাহ্ন ০৩ আগস্ট ২০১৯ | সংবাদটি ৪১০ বার পঠিত
ঈমানদার মুসলমানের সর্বোচ্ছ আকাঙ্ক্ষা হলো কাবা শরিফ ও নবির শহর মদিনা জেয়ারত করা। এ উদ্দেশ্যে সারাবিশ্ব থেকেই মুমিন মুসলমান বছরব্যাপী ওমরা পালন এবং হজের মৌসুমে পবিত্র কাবা শরিফ জেয়ারতে যায়।
কাবা শরিফ জেয়ারত ও তাওয়াফের আকাঙ্ক্ষায় সারা বিশ্ব থেকে মুমিন মুসলমান হজ ও ওমরা পালনে যায়। ওমরা পালনে বেশি সময় লাগে না। ঘণ্টাখানিকের মধ্যে ওমরা শেষ হলেও হজ পালনে সময় লাগে দীর্ঘ ৫ দিন।
মুসলিম উম্মাহর এসব ওমরাহ ও হজ পালনকালীন সময়ে ইহরাম অবস্থায় থাকতে হয়। আর এ সময়ে কাবা শরিফ তাওয়াফ করা হজ ও ওমরার বিধান।
কিন্তু ইহরাম থেকে বের হওয়ার পর যত খুশি নফল তাওয়াফ করা যায়। আর এ সময় অন্যান্য ইবাদতের চেয়ে নফল তাওয়াফের ফজিলতই সবচেয়ে বেশি। কেননা আল্লাহ তাআলা শুধু তাওয়াফকারীদের জন্য প্রতিদিন ৬০টি রহমত বর্ষণ করেন। হাদিস পাকে এসেছে-
‘আল্লাহ তাআলা প্রতিদিন কাবা শরিফের ওপর ১২০টি রহমত নাজিল করেন। এ ১২০টি রহমতের মধ্যে শুধু তাওয়াফকারীদের জন্যই ৬০টি রহমত নির্ধারিত।’
কাবা শরিফ তাওয়াফের সময় অনেক দোয়া করা যায়। তবে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনেক দোয়ার মধ্যে এ দোয়াটিও বেশি বেশি করতেন। আর তাহলো-
اَللَّهُمَّ اِنِّىْ اَسْئَلُكَ الرَّاحَةَ عِنْدَ الْمَوْتِ وَ الْعَفْوَ عِنْدَ الْحِسَابِ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকার রাহাতা ইংদাল মাওতি ওয়াল আফওয়া ইংদাল হিসাবি।’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমাকে আরামদায়ক মৃত্যু দান করেন এবং মৃত্যু পরবর্তী হিসাব থেকে ক্ষমা করেন।’
কাবা শরিফের বিভিন্ন স্থানের জন্য নির্ধারিত দোয়া থাকলেও এ দোয়াগুলোও করা যায়-
اَللَّهُمَّ قَنِّعْنِىْ بِمَا رَزَقْتَنِىْ وَ بَارَكْ لِىْ فِىْهِ وَاخْلُفْ علَى كُلِّ غَائِبَةٍ لِّىْ بِخَيْرٍ لَا اِلَهَ اِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَ لَهُ الْحَمْدُ وَ هُوَ عَلَى كُلِّ شَيئٍ قَدِيْرُ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা কিন্নিনি বিমা রাযাক্বতানি ওয়া বারাকলি ফিহি ওয়াখলুফ আলা কুল্লি গায়িবাতিললি বিখাইরন লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদির।
اَللَّهُمَّ رَبَّ هَذَا الْبَيْتِ الْعَتِيقِ اَعْتِقْ رِقَابَنَا مَنَ النَّارِ وَ اَعِذْنَا مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّاجِيْمِ وَ بَارِكْ لَنَا فِيْمَا اَعْطَيْتَنَا اَللَّهُمَّ اجْعَلْنَا مِنْ اَكْرَمِ وَفْدِكَ عَلَيْكَ اَللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ عَلَى نَعْمَائِكَ وَ اَفْضَلُ صَلَاتِكَ عَلَى سَيِّدِ اَنْبِيَائِكَ وَ جَمِيْعِ رُسُلِكَ وَاَصْفِيَائِكَ وَ عَلَى اَلِهِ وَ صَحْبِهِ وَ اَوْلِيَائِكَ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা রাব্বা হাজাল বাইতিল আতিক্বি ইতিক্ব রিক্বাবানা মিনান নারি ওয়া আয়িজনা মিনাশ শায়ত্বানির রাঝিমি ওয়া বারিক লানা ফিমা আত্বায়তানা, আল্লাহুম্মাঝআলনা মিন আকরামি ওয়াফদিকা আলাইকা, আল্লাহুম্মা লাকাল হামদু আলা নিমায়িকা ওয়া আফদালু সালাতিকা আলা সায়্যিদি আম্বিয়ায়িকা ওয়া ঝামিয়ি রুসুলিকা ওয়া আসফিয়ায়িকা ওয়া আলা আলিহি ওয়া সাহবিহি ওয়া আওলিয়ায়িকা।
কাবা শরিফের তাওয়াফকারীদের জন্য নির্ধারিত স্থানগুলোতে পড়ার দোয়াগুলো তুলে ধরা হলো-
>> মুলতাজেমে পড়ার দোয়া
হাজরে আসওয়াদ ও কাবা শরিফে দরজা মধ্যবর্তী স্থান মুলতাজেম। এ স্থান অতিক্রম করার সময় পড়া-
اَللَّهُمَّ اِيْمَنًا بِكَ و تَصْدِيقًا بِكِتَابِكَ وَوَفَاءً بِعَهْدِكَ وَ اِتِّبَعًا لِسُنَّةِ نَبِيِّكَ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّم
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইমানান বিকা ওয়া তাসদিকান বি-কিতাবিকা ওয়া ওয়াফাআন বি-আহদিকা ওয়া ইত্তিবাআন লিসুন্নাতি নাবিয়্যিকা মুহাম্মাদিন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।’
>> মাকামে ইবরাহিমে পড়ার দোয়া
মাকামে ইবরাহিম অতিক্রম করার সময় এ দোয়া পড়া-
اَللهُمَّ اِنَّ هَذَا الْبَيْتَ بَيْتُكَ وَالْحَرَامَ حَرَمُكَ وَالْاَمْنَ اَمْنُكَ وَ هَذَا مَقَامُ الْعَائِذِبِكَ مِنَ النَّارِ فَأَجِرْنِىْ مِنَ النَّارِ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্না হাজাল বাইতা বাইতুকা ওয়াল হারাম হারামুকা ওয়াল আমনা আমনুকা ওয়া হাজা মাক্বামুল আয়িজিবিকা মিনান নারি ফা আজিরনি মিনান নার।’
>> মিজাবে রহমতে পড়ার দোয়া
মিজাবে রহমত তথা রোকনে ইরাকি থেকে হাতিমে কাবা অতিক্রম করার সময় এ দোয়া পড়া-
اَللهُمَّ اَظِلَّنِىْ تَحْتَ ظِلِّ عَرْشِكَ يَوْمَ لَا ظِلَّ اِلّا ظِلُّكُ وَ لَا بَاقِىَ اِلَّا وَجْهُكَ وَاسْقِنِىْ مِنْ حَوْضِ نَبِيْكَ مُحَمَّدٍ شَرْبَةً هَنِيْئَةً لًّا اَظْمَأُ بَعْدَهَا اَبَدَا
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা আজিল্লিনি তাহতা জিল্লি আরশিকা ইয়াওমা লা জিল্লা ওয়া লা বাক্বিয়া ইল্লা ওয়াঝহাকা ওয়া আসক্বিনি মিন হাওদি নাবিয়্যিকা মুহাম্মাদিন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা শারবাতান হানিয়াতাল লা আজমাউ বাআদাহা আবাদা।’
>> রোকনে শামিতে পড়ার দোয়া
রোকনে শামি থেকে রোকনে ইয়ামেনির দিকে যাওয়ার সময় এ দোয়া পড়া-
اَللهُمَّ اِنِّىْ اَعُوْذُبِكَ مِنَ الشَّكِّ وَ الشِّرْكِ وَ الشِّقَاقِ وَ النِّفَاقِ وَ سُوْءِ الْاَجْلَاقِ وَ سُوْءِ الْمُنْقَلَبِ فِى الْاَهْلِ وَالْمَالِ وَ الْوَلَدِ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাশ শাক্কি, ওয়াশশিরকি, ওয়াশশিক্বাকি, ওয়াননিফাক্বি, ওয়া সুয়িল আখলাক্বি ওয়া সুয়িল মুনক্বালাবি ফিল আহলি ওয়াল মালি ওয়াল ওয়ালাদি।’
>>অতঃপর রোকনে ইয়ামেনিতে পৌঁছেই এ দোয়া পড়া-
اَللهُمَّ اِنِّىْ اَعُوْذُبِكَ مِنَ الْكُفْرِ وَ الْفَاقَةِ وَ مَوَاقِفِ الْخِزْىِ فِىْ الدُّنْيَا وَالْاَخِرَةِ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল কুফরি ওয়াল ফাক্বাতি ওয়া মাওয়াক্বিফিল খিযয়ি ফিদ্দুনইয়া ওয়াল আখিরাহ।’
অতঃপর রোকনে ইয়ামেনি থেকে হাজরে আসওয়াদের দিকে যেতে যেতে এ দোয়া পড়া-
رَبَّنَا اَتِنَا فِى الدُّنْيَا حَسَنَةً وَّ فِى الْاَخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ – وَاَدْخِلْنَا الْجَنَّةَ مَعَ الْاَبْرَارِ – يَا عَزِيْزُ يَا غَفَّارُ – يَا رَبَّ الْعَالَمِيْنَ
উচ্চারণ : ‘রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনইয়া হাসানাতাও ওয়া ফিল আখিরাতি হাসানাতাও ওয়াক্বিনা আঝাবান নার। ওয়া আদখিলনাল জান্নাতা মাআল আবরার। ইয়া আযিযু ইয়া গাফফার, ইয়া রাব্বাল আলামিন।’
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে বেশি বেশি নফল তাওয়াফ করার তাওফিক দান করুন। তাওয়াফের সময় মনের সব আকুতি পেশ করার তাওফিক দান করুন। আল্লাহর বিশেষ রহমতে নিজেদের রাঙিয়ে তোলার তাওফিক দান করুন। আমিন।