শিশু তুহিন হত্যা: নরপশুকেও হার মানিয়েছে
টাইম ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:২১:৫৬,অপরাহ্ন ১৫ অক্টোবর ২০১৯ | সংবাদটি ৪২৯ বার পঠিতনৃশংসভাবে শিশু তুহিন হত্যার ঘটনায় প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠছে সুনামগঞ্জের দিরাইবাসী। তারা বলছেন, এ ঘটনা কল্পনাতীত, এমন নৃশংস হত্যা নরপশুকেও হার মানিয়েছে।
পাষণ্ড খুনিদের ঘৃণা ও ধিক্কার জানিয়ে শিশু তুহিন হত্যার প্রতিবাদে এবং জড়িতদের দ্রুত সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) দুপুর ২টায় থানা পয়েন্টে উপজেলা খেলাঘর আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে শিক্ষক, মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক,সাংস্কৃতিককর্মী,বাউল শিল্পীসহ সব শ্রেণি-পেশার লোকজন অংশ নেন।
উপজেলা খেলাঘরের সভাপতি সুধাসিন্ধু দাসের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত সাগর দাসের পরিচালনায় প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আতাউর রহমান, দিরাই কলেজের প্রভাষক সন্দীপন দাস, শিক্ষক লালবাঁশি দাস, গোলাম মোস্তফা রুমী, সাংবাদিক আবু হানিফ চৌধুরী ও মোশাহিদ আহমদ, বাউল শিল্পী বশির উদ্দীন সরকার, দেলোয়ার হোসেন মিশু, রবিনুর আহমদ, গৌরাঙ্গ পদ সরকার, শুভ দাস, আনোয়ার হোসেন, কালিপদ দাস, আফাজ উদ্দীন,ঝুটন সূত্রধর, গেলাপ দাসসহ অনেকে।
একই দিনে ন্যক্কারজনক এই হত্যার প্রতিবাদে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) উপজেলা কমিটির উদ্যোগে প্রতিবাদসভা ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়।
উপজেলার কেজাউরা গ্রামের ৬ বছরের শিশু তুহিনকে হত্যা করা হয়েছে বর্বরোচিতভাবে। রোববার রাত ৩টার দিকে এই অবুঝ শিশুটির কান-লিঙ্গ ও গলা কেটে গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয় তার লাশ।
নিথর শিশুটির পেটে বিদ্ধ অবস্থায় ধারালো দুটি ছুরিও পাওয়া যায়। শিশুর লাশ দেখে এলাকার সবাই বলছেন এমন নৃশংসতা ও বিভৎসতা এই এলাকায় কেউ দেখেননি।
উপজেলার রাজানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৌম্য চৌধুরী বলেন, এলাকায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনা আরও ঘটেছে, কিন্তু এরকম নৃশংস ঘটনা আমাদের এলাকায় আগে কখনও ঘটেনি। একটি শিশুকে এত বর্বরভাবে হত্যা করা হয়েছে, দেখলেই গা শিউরে উঠে।
নৃশংসভাবে শিশু হত্যার ঘটনায় ধিক্কার ও ঘৃণা জানিয়ে এবং দোষীদের দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি দাবি করে ইউপি চেয়ারম্যান রেজুয়ান হোসেন খান বলেন, ওই পরিবারের সঙ্গে কোনো সামাজিক ও আত্মীয়তা সম্পর্ক করা যায় না, ওরা দানব ও পশুকেও হার মানিয়েছে।
দিরাই কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক সন্দীপন দাস বলেন, এ ঘটনা কল্পনাতীত, এমন নৃশংস হত্যা নরপশুকেও হার মানিয়েছে, শিশু তুহিন হত্যার সঙ্গে জড়িত খুনিদের ফাঁসির দাবি করছি।
মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার আতাউর রহমান বলেন, নিষ্পাপ শিশুর কোনো শত্রু থাকতে পারে না। আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছি, অনেক নির্মমতা দেখেছি কিন্তু আমাদের এলাকায় এমন নৃশংস হত্যা জীবনে দেখিনি। খুনিদের ফাঁসি দাবি করছি।
সোমবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের গচিয়া কেজাউড়া গ্রাম থেকে তুহিনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সে গ্রামের আবদুল বছির মিয়ার ছেলে।
হত্যাকারীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে শিশুটির কান, গলা ও প্যানিশ কেটে পাশবিক কায়দায় হত্যা করে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখেছে। শিশুটির পেটে বিদ্ধ ছিল দুটি ধারালো ছুরি। শিশুর মরদেহে বিদ্ধ ছোরা দুটির হাতলে সোলেমান ও সালাতুলের নাম লেখা ছিল।