এক সপ্তাহে আমেরিকায় করোনা পরিস্থিতির ভয়ংকর অবনতির চিত্র-বাড়বে মৃত্যু
মৃত্যুর সংখ্যা ৩১৬৫ যা ২৩ মার্চ ছিল ৫১৭জন
টাইম সিলেট ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:০১:৪৬,অপরাহ্ন ৩১ মার্চ ২০২০ | সংবাদটি ৪২৩ বার পঠিত
২৩ মার্চ আক্রান্ত-৪২,৪৪৩ জন, ৩০ মার্চ,১৬৪,২৫৩
এমদাদ চৌধুরী দীপু(নিউইয়র্ক,৩০ মার্চ,২০২০ ইং)
মাত্র এক সপ্তাহে পাল্টে গেছে আমেরিকার চিত্র। পাল্টে গেছে নিউইয়র্কসহ আমেরিকার ৫০টি অঙ্গ্রাজ্যের জীবন যাত্রার দৃশ্যপট।এক সপ্তাহে এখানে আক্রান্ত রোগী বেড়েছে প্রায় একলাখ ২০ হাজার,আর মৃতের সংখ্যা বেড়েছে আড়াই হাজারের উপরে। এই সপ্তাহেই আক্রান্ত রোগী বিবেচনায় বিশ্বের সব দেশকে টপকে শীর্ষ করোনা আক্রান্ত দেশের আখ্যা পেয়েছে আমেরিকা। আমেরিকায় আগামী সপ্তাহে মৃত্যুর সংখা আরো বাড়ার আশংকা থাকলেও কমে আসবে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা,এছাড়া আরোগ্য হওয়ার হার বাড়তে পারে বলে মনে করছে সংশ্লিস্ট বিভিন্ন মহল।এদিকে চিকিৎসক এবং নার্সসহ স্বাস্থ্য সেবার লোক কমে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে আমেরিকায় করোনা পরিস্থিতির প্রত্যাশিত উন্নতি হচ্ছেনা বলে মনে করেন অনিচ্ছুক অনেক বাংলাদেশী চিকিৎসক।
এক সপ্তাহে ২১জন বাংলাদেশীর মৃত্যুতে দেশ এবং সারা বিশ্বে বসবাসরত বাংলাদেশীদের মাঝে বিরাজ করছে শোক আর সমবেদনা।রোজা পালন,নফল নামাজ,কোরআন খতম,বড়তসবিহ,সহ নানাভাবে এবাদত বন্দেগীর মধ্যদিয়ে বাংলাদেশীসহ বিশ্বেও সকল মানুষের করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তির জন্য দোয়া করছেন বাংলাদেশীরা। আমেরিকায় বসবাসরত বাংলাদেশীদের প্রতিটি বাড়ি ঘর এখন একেকটি এবাদতখানায় পরিণত হয়েছে। সবার একটাই আকুতি মহামারী থেকে মুক্তি।
তবে অনেক হতাশার মাঝে আশার কথা হচ্ছে রোগ থেকে মুক্তির সংখ্যাও বাড়ছে। এই সপ্তাহে ৫ হাজার রোগী করোনা থেকে মুক্তি পেয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এক সপ্তাহ আগে আমেরিকায় আক্রান্ত রোগী ছিল ৪৪,৪৪৩জন আর বর্তমানে ১,৬৪,০০০ জন। এক সপ্তাহ আগে মৃতের সংখ্যা ছিল ৫১৭জন,বর্তমানে সেই সংখ্যা ৩১৪৮ জন। সপ্তা শেষে আরোগ্য হওয়া রোগীর সংখ্যা ৫৫০৬জন এই সংখ্যা গত ২৩ মার্চ সোমবার ছিল ২৯৫জন।
গত এক সপ্তাহে অস্বাভাবিক রোগী এবং মৃত্যুর ঘটনা সব অঙ্রাজ্যে ছড়িয়েছে। মৃত্যুর মিছিল কোন ভাবেই থামানো যাচ্ছেনা। পুরো আমেরিকাজুড়ে এমন নাজুক পরিস্থিতি বিরাজ করছে যা অতীতে কেউ দেখেনি কিংবা শুনেনি। ৫০ অঙ্গরাজ্যের মধ্যে যে সব অঙ্গরাজ্যে মৃত্যু এবং আক্রান্ত রোগী বেশী সে তালিকায় রয়েছে নিউইয়র্ক,নিউজার্সী,ওয়াশিংটন,কেলিফোর্নিয়া,মেসাজুসেট,ইলিনইস,পেনসেলভেনিয়া,ইন্ডিয়ানা,মিশিগান,ফ্লোরিডা। এছাড়া অন্যান্য অঙ্গরাজ্যগুলো আক্রান্ত এবং মৃত্যু সবই উদ্বেগ এবং আতংক সৃস্টিকারী সকল দেশ,সকল মহল,সকল ধর্ম,বর্নেও মানুষের জন্য।
নিউইয়র্কঃ
২৩মার্চ নিউইয়র্কে আক্রান্ত রোগী ছিল ২০৮৭৫ জন,বর্তমানে ৫৯৫১৩ জন। আজ মৃতের সংখ্যা ১৩৪২জন যা ২৩ মার্চ ছিল ১৫৭জন। পুরো সপ্তাহ নিউইয়র্ক লকডাউন ছিল,এবং সেটি ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
নিউজার্সীঃ
নিউজার্সীতে এখন আক্রান্তের সংখ্যা ১৩৩৮৬জন,যা সপ্তাহ আগে ছিল ২৮৪৪ জন। মৃতের সংখ্যা আজ ১৯৮জন,এক সপ্তাহ আগে ছিল ২৭জন।
ওয়াশিংটনঃ
৪৩৯২জন আক্রান্ত রোগী রয়েছেন ওয়াশিংটনে,মারা গেছেন ২০২জন। এক সপ্তাহে আগে সে চিত্র ছিল আক্রান্ত ১৯৯৬ জন,মৃত্যু,৯৫ জন।
মিশিগানঃ
মিশিগান অঙ্গরাজ্যে এ যাবত করোনা আক্রান্ত সনাক্ত হয়েছে ৬৪৯৮জন,আর মারা গেছেন ১৮৪জন। মাত্র এক সপ্তাহে নাজুক মিশিগান অঙ্গরাজ্যে করোনা ভাইরাস চিত্র।সপ্তাহ শেষে এখানে ১৭০জন রোগীর মৃত্যু যুক্ত হয়েছে। ২৩মার্চ ছিল মাত্র ১৫জন মারা যাওয়ার খবর। আক্রান্ত ছিল ১৩২৮জন। আক্রান্ত রোগী বেড়েছে ৫হাজার।
কেলিফোর্নিয়াঃ
কেলিফোর্নিয়ায় মারা গেছেন ১৪৫ জন,আক্রান্ত রোগী ৫৮৪৬জন। যা এক সপ্তা আছে ছিল মৃত্যু ৩৮জন,আক্রান্ত রোগী ১৯৪৬জন।
মেসাজুসেটঃ
মেসাজুসেট অঙ্গরাজ্য আলোচনায় আক্রান্ত ৪৯৫৫জন রোগীর কারনে,এই অঙ্গরাজ্যে মারা গেছেন ৫৬জন। মাত্র এক সপ্তাহে পরিবর্তন অন্যান্য অঙ্গরাজ্যের মত বিস্ময়কর। ২৩মার্চ রোগী ছিল ৭৭৭জন,আর মৃত্যু ছিল মাত্র ৭জন।
ইলিনইসঃ
এই অঙ্গরাজ্য এখন ৫০৫৭জন করোনা রোগীর যন্ত্রনায় কাতর,এখানে মারা গেছেন ১৯৮জন। অথচ এক সপ্তাহ আগে ১২৮৫জন রোগী সনাক্ত হয়েছিল,মারা গিয়েছির ২৭জন।
পেনসেলভেনিয়াঃ
পেনসেলভেনিয়া অঙ্গরাজ্যে ৪১৫৪জন করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছে,মারা গেছেন ৫১জন। যা এক সপ্তাহ আগের রেকর্ডে আছে আক্রান্ত৮৫১জন,মৃত্যু ৭জন।
ইন্ডিয়ানাঃ
ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যে আক্রান্ত রোগী ১৭৮৬জন,মারা গেছেন ৩৫জন। তিনগুন বৃদ্বি পেয়েছে মৃত্যু।এক সপ্তাহ আগে যা ছিল আক্রান্ত ৩৬৫জন মৃত্যু ১২জন।
ফ্লোরিডাঃ
ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে আক্রান্ত ৫৭০৪জন,২৩মার্চ যা ছিল ১১৭১জন। এক সপ্তাহ আগে মারা গেছেন ১৪জন,বর্তমান মৃত্যু ৭১জন।