ব্যবসা-রাজনীতি সর্বত্রই মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে হবে
ঢাকায় রুশনারা আলী
টাইম সিলেট ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:২৫:৪৩,অপরাহ্ন ২৯ মার্চ ২০২২ | সংবাদটি ২১২ বার পঠিতবৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাণিজ্য বিষয়ক বিশেষ দূত রুশনারা আলী মনে করেন ব্যবসা আর রাজনীতি একে অন্যের পরিপূরক। বাংলাদেশের ১২ বছর ধরে রাজনৈতিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, আজ যে প্রশ্নটি এসেছে তা হলো অন্তর্বর্তীমূলক গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি ব্যবসা-বাণিজ্যকে কতটা প্রভাবিত করে? হ্যাঁ, অবশ্যই ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর রাজনীতির প্রভাব রয়েছে। একটি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি কেমন তার ওপর নির্ভর করে সেখানে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ কতটা স্থিতিশীল হবে।
বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে বন্ধু হিসেবে তারা প্রতিনিয়ত তাগিদ দেন জানিয়ে তিনি বলেন, ব্যবসা বা রাজনীতি সর্বত্রই মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে হবে, সম্মান দেখাতে হবে। তাছাড়া গণতন্ত্র এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সুরক্ষাও জরুরি। এসব মূল্যবোধের ক্রমাগত চর্চা করতে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, উন্নতির ধারায় আত্মতুষ্ট থাকার বা থেমে যাওয়ার সুযোগ নেই। এ জন্য অবশ্যই লড়তে হবে। কারণ এটা মানতে হবে যে, একটি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি হলে ব্যবসা-বাণিজ্যও ওলটপালট হয়ে যায়! মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো ক্রমাগত ঘটতে থাকলে ব্যবসায়ী এবং বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ বাড়ে।
ভয়ে অনেকে ব্যবসা গুটিয়ে নেন। ৫ দিনের সফরে আসা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বৃৃটেনের প্রভাবশালী ওই রাজনীতিক গতকাল বিকালে ঢাকাস্থ বৃটিশ হাইকমিশনের বাসভবনে গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সেখানে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে সরকার এবং দেশের জনগণের প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়ে আগামী ৫০ বছরে দুই দেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছানোর দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচনগুলো অবাধ এবং সুষ্ঠু হওয়া জরুরি। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সুরক্ষিত রাখতে এটা অপরিহার্য। তবে এখানকার নির্বাচন কোন প্রক্রিয়ায় হবে তা একান্তই বাংলাদেশের মানুষের সিদ্ধান্ত। বন্ধু হিসেবে তারা পরামর্শ দিতে পারেন জানিয়ে রুশনারা বলেন, আমরা উদ্বেগজনক ইস্যুগুলো কখনো এড়িয়ে যাই না।
সমালোচক বন্ধু হিসেবে আমরা সরকারের কাছে নিয়মিতভাবে উদ্বেগগুলো উত্থাপন করি। তার কাছে প্রশ্ন ছিল বাংলাদেশের সঙ্গে বৃটেনের এফটিএ সই করার কোনো চিন্তা আছে কিনা? জবাবে তিনি বলেন, আপাতত হয়তো তা হবে না, তবে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়লে তা হতে পারে। বাংলাদেশে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এখনো কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমি এ নিয়ে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা করবো। এসবের সমাধান করা দরকার। বাংলাদেশে বৃটিশ ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস খোলার বিষয়টিও আটকে আছে জানিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে আমি এ নিয়ে আলোচনা করবো। আশা করি তারও সমাধান পাবো। ঢাকা-লন্ডন রুটে বৃটিশ এয়ারওয়েজের ফ্লাইট চালুর কোনো সম্ভাবনা আছে কিনা? জানতে চাইলে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত বৃটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন প্রশ্নটির জবাব দেন।
বলেন, এটা সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয় নয়। প্রাইভেট কোম্পানি বৃটিশ এয়ার নিশ্চয়ই ঢাকা রুটে তাদের ফ্লাইট কতটা অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক এবং স্থিতিশীল হবে তা নিয়ে ভাববে। সম্ভাবনাময় রুট হলে নিশ্চয়ই তারা ফ্লাইট রিজিউম করবে। তবে এখনো এ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানান বৃটিশ দূত।
রুশনারা আলী আগামীকাল কক্সবাজার যাচ্ছেন রোহিঙ্গাদের অবস্থা সরজমিনে দেখতে। সেখান থেকে ফিরে যাবেন পৈতৃক নিবাস সিলেটে। বিশ্বনাথসহ ওই অঞ্চলে থাকা স্বজন-শুভাকাঙ্ক্ষিদের সঙ্গে ক’ঘণ্টা কাটিয়ে রোমাঞ্চকর সব স্মৃতি নিয়ে লন্ডনে ফিরবেন তিনি।