মোটরবাইক কেনার জমানো টাকায় রাস্তার ইট কিনে দিলেন মানবিক ওয়াহিদুজ্জামান
টাইম সিলেট ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:৪৩:১৩,অপরাহ্ন ০৬ অক্টোবর ২০২০ | সংবাদটি ৫১৪ বার পঠিতনিজস্ব প্রতিবেদক:
মোটরবাইক কেনার জমানো টাকায় ভাঙ্গা রাস্তায় ইট কিনে দিলেন মানবিক হাফিজ,ক্বারি মো. ওয়াহিদুজ্জান।
খুলনা জেলার ডুমুরিয়া থানার শরাফপুর ইউনিয়নের দত্তডাঙ্গা নামক গ্রামে একটি মসজিদ নির্মান কাজের তদারকি করতে গিয়ে দেখেন ওই গ্রামের কয়েকজন সনাতন ধর্মের (হিন্দু) মহিলা কর্দমাক্ত ভাঙ্গা রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ পা পিছলে পড়ে গিয়ে একজন মহিলা প্রায় অর্ধউলঙ্গ হয়ে যান!
এই দৃশ্য দেখে তাঁর মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে যায়। তখনই সিদ্ধান্ত নিলেন যে কোন উপায়ে এই রাস্তাটি সাধারন মানুষের চলাচল উপযোগী করতে হবে। কিন্তু তাঁর আর্থিক সচ্ছলতা নেই! রাস্তাটি মেরামতের জন্যও একাকার কেউ এগিয়ে আসেনাই, কি করা যায় তবে এই রাস্তাটির কাজ কি হবেনা? ভাবতে ভাবতে হঠাৎ মনে হলো নিজের মোটরসাইকেল কেনার জন্য তিল তিল করে যে টাকা জমিয়েছিলেন সেই দিয়েই ইট কিনবো। সেভাবেই সিদ্ধান্ত নিলেন এবং ওই রাস্তার মেরামতের জন্য ইট কিনে দিলেন।
তিনি বলেন, আমি যখন চলাচল করি তখন দেখি কোথায় সমস্যা আছে, সমাধান কি ভাবে হবে। কোথায় অসঙ্গতি আছে এটা দুর করার পথ বা উপায় কি? কোন মানু্ষটি বিপদে আছে তাকে বিপদ মুক্ত করা বা সহযোগিতা কিভাবে করা যায়। কোন ব্যক্তি অসুস্থ আছে তার চিকিৎসা কি ভাবে করা যায় এগুলোই মাথায় রেখেই কাজ করার চেষ্টা করে থাকি।
এবং সেভাবেই সকল মানুষের কল্যানেই বেশি সময় পার করে থাকি। আমাদের ইউনিয়নের অধিকাংশ রাস্তার-ঘাটের বড়ই করুন দশা।
কেয়াখালী গ্রামের রাস্তা, শরাফপুরের তৈয়ব পুরের মেইন রাস্তা, দত্তডাঙ্গা, দাশপাড়ার ভিতরের রাস্তা, আসাননগর রাস্তা,সেনপাড়া গানী বাড়ীর রাস্তা, শরাফপুরের গোলদার বাড়ীর রাস্তা সহ প্রায় রাস্তাগুলো চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আমি সরকারের স্থানীয় সংশ্লিষ্টদের দ্রুত মেরামমতের জোর দাবী জানাচ্ছি।
ওয়াহিদুজ্জান খুলনা জেলার ডুমুরিয়া থানার কেয়াখালী গ্রামের মৃত মো: আলী মোড়লের ছেলে। তিনি একজন কোরআনে হাফেজ।
এবং জেনারেল লাইনেও এইচ এস সি পাশ করেছেন।
ওয়াহিদুজ্জামান নিজে আর্থিকভাবে অসচ্ছল হয়েও ছাত্রজীবন থেকেই সামর্থ্যের আলোকে নিজ এলাকায় গরীব অসহায় মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছেন এবং বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের ওতপ্রোতভাবে জড়িত রয়েছেন।
সাম্প্রতিক বৈশ্বিক মহামারি করোনাকালে কর্মহীন অসহায় মানুষকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, করোনাভাইরাসের কারণে মারা যাওয়া মৃতদের লাশ দাফনকাজে নিকট আত্নীয় স্বজন যখন এগিয়ে আসেনি ঠিক তখনই নিজেই খুলনা জেলায় একটি ঠিম গঠন কর সেই ঠিমের প্রধান হয়ে এ পর্যন্ত ৩৯জন মৃতদেহের দাফন-কাফনের কাজ করেছেন।
তাঁর এই মহৎ কাজের জন্য সর্বসাধারণের প্রশংসা কুড়াচ্ছেন।