মৌলভীবাজার-শমশেরনগর ও কমলগঞ্জ সড়কের বেহাল দশা যান চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ ॥ জনদুর্ভোগ চরমে
টাইম সিলেট ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:৩১:৩৯,অপরাহ্ন ২২ আগস্ট ২০১৯ | সংবাদটি ৫৪১ বার পঠিত
কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) থেকে ফিরে এম আহমদ আলী:: মৌলভীবাজার- শমশেরনগর-কমলগঞ্জ সড়কের বেহাল দশায় যান চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।ফলে জনদুর্ভোগ চরমে পৌছেছে। দীর্ঘদিন থেকে সংস্কার না হওয়ায় সড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্ত আর খানাখন্দে যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে । মৌলভীবাজার- শমশেরনগর-কমলগঞ্জ সড়ক গত চার বছর যাবত সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতাধীন এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যাত্রীদের এখন যেমনি সময়মত গন্তব্যে পৌঁছা দায়,তেমনি রাতের বেলা গুনতেও হয় অতিরিক্ত ভাড়া। অতিরিক্ত সময় ও ব্যয় আর বেহাল সড়কের কারণে যানবাহনগুলোর শোচনীয় অবস্থায় সড়কে যাতায়াতকারী রোগী ও সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। দীর্ঘদিন থেকে সংস্কার না হওয়া এবং বিগত নদী ভাঙ্গকের ফলে অকাল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এই সড়ক গুলো মেরামতের দাবি জানানো হলেও মেরামত তো দূরের কথা, সড়কের পুরো অংশই এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠেছে।
সরেজমিনে এই সড়কদিয়ে গেলে দেখা যায়, পর্যটন জেলা ও প্রবাসী অধ্যুষিত জনগুরুত্বপূর্ণ মৌলভীবাজার- শমশেরনগরও কমলগঞ্জ সড়কের মাতার কাপন,চৈত্রঘাট,শ্যামের কোনা, আতুড়ের ঘর,মুন্সিবাজার,মইদাইলসহ বিভিন্ন স্থানে ভেঙে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। অপর দিকে শমশেরনগর বাজার থেকে ভারতের সাথে সংযুক্ত চাতলাপুর শুল্ক স্টেশন সড়কের আরো ১৪ কিলোমিটার এলাকায় সড়কে বড় বড় গর্তে যান চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ব্যাহত হচ্ছে আমদানি-রপ্তানি। বৃষ্টির সময় সড়কে পানি জমে গর্ত আরো ঝঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণে চালকরা যানবাহন নিয়ে দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে। নিরাপদে গাড়ি চালাতে চালকদের যেমন সতর্ক থাকতে হচ্ছে, তেমনি যাত্রীরা যানবাহনে থাকেন উদ্বেগ উৎকন্ঠায়।
মৌলভীবাজার- শমশেরনগরও কমলগঞ্জ সড়কের ২০ কিলোমিটার সড়কে দুই বছর ধরেই সামান্য ইট-সুরকি দিয়ে ভরাট করার চেষ্টা চলছে। তবে বৃষ্টির হলে এসব গর্তে পানি জমে। যানবাহনের চাকার পিষ্টে সড়ক থেকে ইট-সুরকি ছিটকে পড়ে পুনরায় গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশন দিয়ে ভারতের উত্তর ত্রিপুরা রাজ্যে পণ্যও মালামাল আমদানি-রপ্তানি ছাড়াও এই সড়কে প্রতিদিন কমলগঞ্জ ও কুলাউড়া উপজেলার একাংশের হাজারো শিক্ষার্থী, কর্মজীবী ও সাধারণ মানুষ জেলা সদরে আসা-যাওয়া করেন।
সিএনজি অটোরিকশা চালকরা এই প্রতিবেদককে জানান, এই সড়কে গাড়ি চালাতে গিয়ে যেমনি গাড়ীর যন্ত্রাংশ বিনষ্ট হচ্ছে, তেমনি যাত্রীদের দুর্ভোগের অন্তনেই। ঝুঁকি নিয়ে গাড়ী চালাতে হয়। অনেকে বাধ্য হয়ে কালেঙ্গা হয়ে মৌলভী বাজার যাতায়াত করতে হয়।
বিভিন্ন পেশাজীবী ও শিক্ষার্থীরা জানান, সড়কের বড় বড় গর্তের কারণে বাড়তি ভাড়া, দ্বিগুণ সময়, ঝাঁকুনি যে কত কষ্টকর তা এ সড়কে চলাচলকারী যাত্রী ছাড়া বোঝানো সম্ভব নয়।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়,মৌলভীবাজার-শমশেরনগর-চাতলাপুর সড়কের সংস্কার কাজের দরপত্র হলেও কার্যাদেশ দেওয়া হয়নি। এটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ৩৩ দশমিক ৫ কিলোমিটার এই সড়কের ২০ কিলোমিটার এলাকার বিভিন্ন অংশে কাজ হবে। এতে ব্যয় হবে ৪৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে সড়কে যেসব বাজার রয়েছে, সেসব স্থানে কাজ হবে না। বাজার এলাকায় পরবর্তীতে আরসিসি ঢালাইয়ের কাজ হবে। অন্যদিকে যেসব স্থান বন্যায় তলিয়ে যায় সেসব স্থানেও কাজ হচ্ছে না। সেসব স্থানে উঁচু করে পুণর্র্নিমাণ করা হবে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ মৌলভীবাজার এর নির্বাহী প্রকৌশলী শরিফুল আলম সড়কের বেহাল দশার সত্যতা স্বীকার করে বলেন,সড়কের ২০ কিলোমিটার টেন্ডারের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। অনুমোদন হয়ে গেলেই ঠিকাদার নিয়োগ দেয়া হবে। এর কিছুদিন পর কাজ শুরু হওয়ার আশাবাদী। তবে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কাজ বেড়ে গেছে। মৌলভী বাজার সওজ এর নিজস্ব তহবিল থেকে যেটুকু সম্ভব গর্ত ভরাট করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।