এদেশে মুসলিমদের সাথে হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টানরা থাকতে পারবে কিন্তু নাস্তিকদের ঠাঁই নেই’—-জুনাইদ বাবুনগরী
ভার্থখলা জামেয়ার বার্ষিক সম্মেলনে
টাইম সিলেট ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:২৯:৪৬,অপরাহ্ন ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ | সংবাদটি ৩০৩ বার পঠিতহেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী বলেছেন,’আমাদের নবী সর্ব শ্রেষ্ঠ। আমরা শ্রেষ্ঠ উম্মত। আমাদের সংবিধান কুরআন। যারা এসব বিশ্বাস করে তারা আস্তিক।আর যারা বিশ্বাস করেনা তারা নাস্তিক। তারা আল্লাহকে বিশ্বাস করেনা। তাদের যুক্তি হলো আমরা আল্লাহকে দেখিনা, তাই আল্লাহকে বিশ্বাস করিনা।আমি প্রশ্ন করি, তোমরা আত্মাকে বিশ্বাস কর; অথচ তা দেখনা। তাহলে আত্মাকে বিশ্বাস করো কেন?’
তিনি বলেন,’নাস্তিকেরা কোন ধর্ম মানেনা। এদেশে মুসলিমদের সাথে হিন্দু,বৌদ্ধ ও খৃষ্টানরা থাকতে পারবে। কিন্তু নাস্তিকেরা থাকতে পারবেনা। আওয়ামীলীগ- বিএনপি সবাই ধর্ম মানে। ঈদের নামাজে আমরা সবাই এক কাতারে শামিল হই। পরস্পরে পরস্পরের সাথে আত্মীয়তাও করি। কিন্তু নাস্তিকদের সাথে আমাদের আস্তিকদের কোন সম্পর্ক নেই, আপস নেই।’
তিনি আরো বলেন,’ সারা জীবন হক কথা বলে যাবো। হক কথা বলতে গিয়ে যদি জেল-জুলুম আসে, ফাসি কষ্টেও যদি ঝুলতে হয়-তবুও সত্য কথা বলতে পিছপা হবোনা।’
আল্লামা বাবুনগরী বলেন,’ইহুদী,খৃষ্টান ও নাস্তিকেরা বিশ্ব থেকে ইসলামের কালেমা নির্মূলের অপচেষ্টা করছে। তারা জানেনা, এ বিশ্বে ইসলামই টিকে থাকবে। ইসলাম বিদ্বেষীরা নির্মূল হয়ে যাবে, যেভাবে ফেরাউন-নমরুদ নির্মূল হয়েছে।’
তিনি গতকাল ২২ ফেব্রুয়ারী সোমবার রাতে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী জামেয়া নূরিয়া ইসলামিয়া ভার্থখলার দু’দিন ব্যাপী বার্ষিক ইসলামী মহা সম্মেলনের সমাপনী দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন।
হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা নুরুল ইসলাম জেহাদী বলেন,’সত্য কখনো দমেনা। যত দমানোর চেষ্টা করা হয়, তত তা জ্বলসে উঠে। আবু জেহেহেল-আবু লাহাবরা সত্যকে ফুৎকারে নিভিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু সত্যকে নিভাতে পারেনি। তারা জ্বলে ভষ্ম হয়েছে।
আজ আলেমদের কন্ঠকে স্তব্ধ করে দেয়ার অপচেষ্টা চলছে। যারাই এ চেষ্টা করছে, তারাও আবু জেহেল-আবু লাহাবের পরিণতি ভোগ করবে।’ তিনি বলেন,’ কওমী মাদরাসাকে বন্ধ করার ষড়যন্ত্র চলছে। এগুলো রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
বাংলাদেশ সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হয়েছে বলে করোনার মধ্যেও কওমী মাদরাসা খুলে দিয়েছে। এসব মাদরাসায় কুরআন পড়া হচ্ছে বিধায় এ জাতিকে আল্লাহ করোনা মহামারির ভয়াবহ প্রকোপ থেকে রক্ষা করেছেন।
কিন্তু নাস্তিক-মুর্তাদরা এই বাস্তবতা মানতে চায়না। এরা কুলাঙ্গার,মুসলিম প্রধান দেশের নাগরিক হওয়ার যোগ্যতা তারা রাখেনা।’ তিনি কাদিয়ানীদেরকে অবিলম্বে অমুসলিম ঘোষণার দাবী জানান।
হেফাজতের নায়েবে আমীর ও নারায়ণগঞ্জ ডিআইটি মসজিদের খতীব মাওলানা আবদুল আউয়াল বলেন,
‘ইসলাম প্রতিরোধ যুদ্ধের কথা বলে। অগ্রবর্তী জেহাদ ইসলামের ইতিহাসে নেই।মুসলমানরা ঠেকায় পড়ে যুদ্ধে জড়িয়।
কুরআনে জেহাদ আছে, হাদীসেও আছে। সূতরাং যারা জেহাদ অস্বীকার করে;তারা কুরআন-হাদীস অস্বীকার করে। জেহাদ কেয়মত পর্যন্ত ফরজ।’ তিনি বলেন,এদেশের ওপর আল্লাহর বিশেষ রহমত আছে। কারণ, এই করোনার মধ্যে বিশ্ব যখন দিশেহারা। তখনো বাংলাদেশ স্থিতিশীল অবস্থায় আছে। এই মহামারীতে কওমী মাদরাসাসমূহ খোলা রয়েছে। যাদের কান্নার ধ্বনি আল্লাহ কবুল করেছেন। তাই তিনি এদেশের ওপর রহম করেছেন।’
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের উপদেষ্টা ও জামেয়া ভার্থখলার প্রিন্সিপাল হাফিজ মাওলানা শায়খ মজদুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে ও জামেয়ার মুহাদ্দিস মাওলানা শামসুদ্দিন মুহাম্মদ ইলয়াসের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনের সমাপনী দিনে আরো বক্তব্য রাখেন, হেফাজতের উপদেষ্টা ও আঙ্গুরা মোহাম্মদ পুর মাদ্রাসার মুহতামিম শায়খ মাওলানা জিয়া উদ্দিন, নারায়ণগঞ্জ ডিআইটি মসজিদের খতীব ও হেফাজতের নায়েবে আমীর মাওলানা আবদুল আউয়াল,যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মোহাম্মদ শফিক উদ্দিন, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমদ আলী কাসিমী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা মুহাম্মদ মুনতাসির আলী,মুফাসসিরে কুরআন মাওলানা হাবিবুল্লাহ বাহার,মাওলানা মুফতী শিহাব উদ্দিন চট্টগ্রাম, ডা: আবু তাওসীফ, অধ্যাপক মাওলানা আবদুস সবুর, জামেয়া মাদানিয়া ইসলামিয়া কাজির বাজার সিলেটের প্রিন্সিপাল মাওলানা সামিউর রহমান মুসা,মাওলানা নূরুল হক নবিগঞ্জী,রামধা মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা ইউসুফ খাদিমানী,নূরুল ক্বোরআন মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা আহমদ বিলাল,মাওলানা কারী সিরাজুল ইসলাম, মাওলানা তাজুল ইসলাম হাসান, মাওলানা দিলওয়ার হোসাইন,মাওলানা মুখলিছুর রহমান ও মাওলানা আমজাদ হোসাইন প্রমূখ।