সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় বিদ্যালয়ের পাশে জুয়ার রমরমা ব্যবসা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:২৫:১৫,অপরাহ্ন ১২ জুলাই ২০১৯ | সংবাদটি ৮৩৮ বার পঠিতসিলেটের দক্ষিণ সুরমায় থেমে নেই ইন্টারনেট ভিত্তিক তীর জুয়া ও টিকিটিকি নামক জুয়া। লাগামহীন প্রচার ও প্রসারে আবারো সর্বত্র আলোচনায় দক্ষিণ সুরমা। অলি-গলি ছাড়িয়ে এবার বিদ্যালয়ের পাশে বসেছে তীর জুয়া ও টিকিটিকি নামক জুয়ার বোর্ড।
দক্ষিণ সুরমার রেলওয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দেয়াল ঘেষে পসরা সাজিয়ে বসেছে এসব জুয়ার বোর্ড। বেপরোয়াভাবে জুয়ারীদের মদদ দিচ্ছে এক প্রকার অসাদু পুলিশ, হলুদ সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদরা। তাদের ছত্রছায়ায় কিছুতেই বন্ধ হচ্ছেনা এই জুয়ার বোর্ডগুলি।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, রেলওয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দেয়াল ঘেষে রয়েছে একটি চায়ের দোকান। দোকানের মালিক মিন্টু মিয়া নাকি এই জুয়া খেলার অপরাধে দীর্ঘদিন কারাভোগও করেছেন। কিন্তু দোকানের ভেতরে ঢুকলেই অন্য জগত। টিভিতে চলছে বিশ্বকাপ আর ক্রিকেট টেবিলে বসা লোকজন প্রতি ওভারে প্রতি বলে ধরছেন বাজি। দোকানের পেছনকার দৃশ্য আরো ভয়ানক। চেয়ার টেবিল নিয়ে বসে আছে দুই যুবক কাটছে তীর জুয়ার নাম্বার। দোকানটির ঠিক উল্টোপাশে রয়েছে মস্তকিন নামে আরেক জনের চায়ের দোকান। সেখানকার অবস্থা একই।
অনুসন্ধানে জানা যায়, জাহেদ আহমদ নামে একজন এই কয়েকটি বোর্ডের লোকজনসহ সবকিছু দেখাশুনা করে থাকেন। তীরের টিকেট কাটার ছলে জাহেদের সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে পুলিশের অভিযানের ভয়ে এসব খেলিনা বলার পর তিনি বলেন আমাদের এখানে কোন সমস্যা নেই ফাঁড়ি পুলিশ ম্যানেজ করা আছে। অভিযান হলে আগে থেকে বলে রাখে আমাদের। আমরা প্রতিদিন টাকা দিয়ে আসছি তাদের। আরও জানা গেছে, এ বোর্ডগুলির সাথে জড়িত রয়েছে এলাকার প্রাভাবশালীরাও। দিলোয়ার, মিন্টু, জাহেদ, ফরিদ, মস্তকিন, ইব্রাহীমসহ এই বোর্ডে রয়েছে আরো অনেক পার্টনার। এদের মূল কাজই হচ্ছে জুয়ার বোর্ড বসানো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেখানকার এক ট্র্যাংক লরী চালক বলেন, আপনি আমার নাম দিলে দিতে পারেন কোন সমস্যা নেই। কিন্তু যদি পারেন তাহলে এই জুয়া খেলার বোর্ডগুলি বন্ধ করান। কারন এই বোর্ড গুলির কারনে স্কুল কলেজ পড়–য়া ছাত্রসহ আমাদের মতো শ্রমিকরা সর্বস্য হারিয়ে অনেকেই আজ নি:স্ব। তিনি জানান, এই বোডগুলির পাশে যেমন রয়েছে বিদ্যালয় তেমনি রয়েছে পদ্মা ও যমুনা ডিপু। জুয়ারীদের মূল লক্ষই এসব প্রতিষ্ঠান। আমাদের শ্রমিকদের পাশাপাশি এখানে জুয়ার বাজি ধরতে আসে রিকসা-ভ্যান চালক, স্কুল পড়–য়া শিক্ষার্থী ও কলোনিতে বসবাসরত নারীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। প্রতিদিনই এখানে সিএজিচালিত অটোরিক্সা করে পুলিশ আসে জাহেদের সাথে দেখা করতে।
এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) জেদান আল মুসা কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রেলওয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দেয়াল ঘেষে জুয়ার বোর্ড বসেছে এটা আমাদের জানা ছিলো না। তিনি বলেন, জুয়া এবং মাদকের বিরুদ্ধে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ সবসময় জিরো টলারেন্সে থাকবে। আমরা যেখানেই জুয়া এবং মাদকের খবর পাচ্ছি সেখানেই অভিযান চালাচ্ছি। আর এসবের সাথে যদি আমাদের পুলিশের কোন সদস্য জড়িত থাকে তাহলে তাদেরকেও ছাড় দেওয়া হবে না।