রাজনগরের খেয়াঘাটে সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত অর্ধশত, ১২টিরও বেশি দোকান ভাংচুর-লুট, ৬৯ রাউন্ড ফাঁকা গুলি

টাইম সিলেট ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:৪৭:৪০,অপরাহ্ন ২০ মার্চ ২০২১ | সংবাদটি ৩৭৯ বার পঠিত
আবুল কাশেম অফিক :
মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার খেয়াঘাট বালাগঞ্জের পার্শ্ববর্তী (তুলাপুর) সিএনজি চালকদের মারামারির জের ধরে কয়েকটি গ্রামের সংঘর্ষ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপে পুলিশসহ অর্ধশত আহহ ওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এসময় খেয়াঘাট (তুলাপুর) বাজারের ১২টিরও বেশি দোকান ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। রাজনগর থানার পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে পুলিশ।
শনিবার (২০ মার্চ) সকাল ৯টা থেকে দুপুর পর্যন্ত সংঘর্ষ অব্যাহত ছিল। রাজনগর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান খান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রিয়াংকা পাল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জিয়াউল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রাজনগর উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের খেয়াঘাট বাজার এলাকার ইউপি সদস্য লুৎফুর রহমানের দুই ভাতিজা নূও মিয়ার ছেলে কাজল ও দিলাল রাজমিস্ত্রী কাজের জন্য শাহপুর গ্রামে যাচ্ছিলেন। খেয়াঘাট বাজারে এসে কাজে যাওয়ার জন্য বেড়কুড়ি গ্রামের এক সিএনজি চালকের গাড়িতে ওঠেন তারা। গাড়ি ছাড়তে দেড়ি হওয়ায় তারা অন্যগাড়িতে চলে যেতে চাইলে উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। বিষয়টি সমাধানের জন্য খেয়াঘাট বনিক সমিতির সহসম্পাদক মাহমুদ মিয়া, সিএনজি ড্রাইভার সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবিদ আহমদ দিপু, দৌলত মিয়া, সুইট মিয়া সহ বসেন। এসময় লুৎফুর রহমানের অপর ভাতিজা হেলাল মিয়া এসে সমাধান মানেন না এবং বিষযটি তারা পারলে দেখবেন বলে চলে যান। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে
উত্তেজনা ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। পরে উভয় পক্ষের গ্রামের লোকজনও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে
বাজারে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। একপক্ষ অপরপক্ষের দোকান ভাংচুর ও লুট করে। বাজারের জাকির মিয়া ও লুৎফুর মেম্বারের দোকান বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। খবর পেয়ে রাজনগর থানা পুলিশের একটি দল আসেন। এসময় রাজনগর উপজেলার সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা আহমদ বিলালও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে পুলিশকে সহায়তা করেন।
এদিকে উভয় পক্ষের সংঘর্ষ থামানোর সময়
রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসিম, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) দেব দুলাল
ধরসহ চার পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে পুলিশ ৬৯ রাউন্ড ফাঁকা
গুলি ছুঁড়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে রাজনগর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান খান, উপজেলা
নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা পাল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জিয়াউল হক
পরিদর্শন করেন। রাজনগর উপজেলা পরিষদের সাবেক দুই ভাইস চেয়ারম্যান আহমদ বিলাল, ফারুক
আহমদ, ফতেহপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জামি আহমদসহ বিষয়টি নিষ্পত্বির চেষ্টা
চালাচ্ছেন।
এদিকে বিষয়টি সামাধানের জন্য উভয়পক্ষ যাতে এ ধরনের ঘটনার পূণরাবৃত্তি না করে সেজন্য উভয়
পক্ষ উপজেলা নির্বাহী নির্বাহী অফিসার প্রিয়াংকা পালের উপস্থিতিতে ১০ জন সদস্যের নাম
দিয়েছে। বর্তমানে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন রয়েছে।
রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসিম বলেন, সিএনজি গাড়িতে উঠা
নিয়ে দুইজনের বাকবিতণ্ডার জেরে উভয়ের গ্রামের লোকজন জড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় গণ্যমান্য
ব্যক্তিরা বিষয়টি সমাধানের প্রক্রিয়া করছেন। প্রয়োজনে পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত লুণ্ঠনকারীদের মধ্যে লুটপাটের মালামাল নিয়েও সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।