সিলেটে নদীতে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন, ক্ষোভ

টাইম সিলেট ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ২:৫৭:০২,অপরাহ্ন ১৪ ডিসেম্বর ২০২২ | সংবাদটি ১৬৫ বার পঠিতসিলেটের সারী নদীতে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন চলছে। গতকাল দিনভর এ দৃশ্য দেখে ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয়রা। ১৪২৯ বাংলা সনে সারী নদী তিনটি ভাগে বিভক্তি করে দুটি অংশ (সারী-১: সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের সারী ব্রিজ হতে নিচের অংশ), (সারী-২: সারী ব্রিজ হতে লালখাল পর্যন্ত) এবং (সারী-৩: মামলাভুক্ত দাগসমূহ) তারমধ্যে সরকার বাহাদুর শ্রমিকদের সনাতন পদ্ধতিতে বালু পাথর আহরণের জন্য ইজারা প্রদান করে। ইজারাদার ব্যতীত রেখে আরেকটি প্রভাবশালী চক্র সোহেল তাজ ও তার লোকজন সরকার ঘোষিত অবস্থান নিয়ে ইতিমধ্যে কামরাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন সারী নদী খননের নামে বোমা মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন শুরু করে। এদিকে খবর পেয়ে এলাকার বালু শ্রমিক ও এলাকাবাসীরা দ্রুত বাধা প্রদান করে। কিন্তু শ্রমিক ও এলাকাবাসীর বাধাকে তোয়াক্কা না করে বোমা মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন শুরু করে সোহেল তাজ ও লোকজন। এ সময় সোহেল তাজের প্রতিনিধি মাসুম আহমদ জানিয়েছেন- সরকারের সঙ্গে অনুমতি নিয়ে সারী নদী খননের জন্য সিলেটের ডিসির সঙ্গে চুক্তি করে নদীর নাব্য সৃষ্টির জন্য সারী নদী খননের অনুমতি নিয়ে কাজ শুরু করছি। ডিসির সঙ্গে চুক্তির কপি দেখতে চাইলে তারা কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। এমনকি সোহেল তাজ এলাকায় অবস্থান করলেও তিনি প্রতিবেদকের সম্মুখে আসেননি। সোহেল তাজ চারিকাটা ইউপি’র এক সদস্যের মোবাইল ফোনে জানান, আমার সঙ্গে সিলেটের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সারী নদী খননের নামে চুক্তি হয়েছে।
সেজন্য আমি নদী খনন কাজ শুরু করেছি। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন অবগত আছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন- যেখানে ডিসির সঙ্গে চুক্তি হয়েছে সেখানে উপজেলা প্রশাসনকে জানানোর প্রয়োজন নেই। অনুমতির কাগজ দেখতে চাইলে তিনি দেখাতে পারেননি। নিজপাট ইউপি’র চেয়ারম্যান মো. ইন্তাজ আলী বলেন, আমি জেনেছি তারা গায়ের জোরে বোমা মেশিন বা ড্রেজার মেশিন বসিয়ে কোনো প্রকার অনুমতি ব্যতীত নদী খনন কাজ শুরু করেছে। কিন্তু সারী নদীর প্রধান শাখা নদী বড় নায়াগাং নদীর ১০ কিলোমিটার এলাকা বালুতে ভর্তি হয়ে পানি শুকিয়ে গেছে। সেই নদীর তীরবর্তী পাড়ের বাসিন্দারা পানির জন্য হাহাকার করছে। সেই বড়নয়াগাং নদী খননের প্রয়োজন কিন্তু সেই নদী খনন না করে সারী নদীর নাব্য থাকার পরও প্রভাবশালী চক্র অবৈধভাবে খনন কাজের নামে বালু লুট করার পাঁয়তারা করছে। তাদের কোনো অনুমতি আছে বলে আমার জানা নেই। শ্রমিকদের স্বার্থে যন্ত্র দানব এই মেশিন বন্দের দাবি জানাচ্ছি। জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল আহমদ বলেন, সারী নদী খননের কোনো অনুমতি নেই। যুগ যুগ ধরে সারী নদীর নাব্যটির রয়েছে। যেখানে বালু জমছে সেগুলো শ্রমিকরা তুলে নিচ্ছে এবং সরকার বাহাদুর ইজারার মাধ্যমে রাজস্ব আদায় করছে। কেউ বোমা কিংবা ড্রেজার মেশিন বসানোর কোনো অনুমতি নেই। শুধুমাত্র সনাতন পদ্ধতিতে বালু উত্তোলন হবে। যারা বোমা কিংবা ড্রেজার মেশিন বসিয়েছে তারা অবৈধ কাজ করেছে। প্রশাসনের উচিত দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা। জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল বশিরুল ইসলাম বলেন, ডিসি স্যার অনুমতি প্রদান করবেন উপজেলা প্রশাসন অবশ্যই পত্র পাবে। কিন্তু নদী খননের বিষয়ে আমাদের কোনো কিছু জানা নেই। যারা এটি করছে অবশ্যই এটা বেআইনি। এলাকাবাসী আমার দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। আমি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। copy manobzamin