সিলেটে নির্বাচন প্রস্তুতিতে আওয়ামী লীগ, আন্দোলনে বিএনপি
টাইম সিলেট ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ১২:৩৮:৩০,অপরাহ্ন ১০ আগস্ট ২০২৩ | সংবাদটি ১৮০ বার পঠিত
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর পরই আওয়ামী লীগে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। সিলেট সিটি করপোরেশনসহ জেলার ৬টি উপজেলার আওয়ামী লীগের নেতারাও নির্বাচনের দিকে ঝুঁকছেন। সর্বশেষ গত ৬ই আগস্ট দলীয় প্রধানের উপস্থিতিতে বিশেষ সাধারণ সভার পর সিলেটে এসে নেতারা পুরোদমে প্রস্তুতি শুরু করেছেন। তবে বিএনপিতে নেই নির্বাচনের আমেজ। নির্বাচনের চেয়ে বিএনপি’র নেতারা আন্দোলনকে প্রাধান্য দিয়ে মাঠে নেমেছেন। নিরপেক্ষ সরকারের দাবি পূরণে সিলেট বিএনপি’র নেতারা একাট্টা হয়ে মাঠে রয়েছেন।
বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন; নির্বাচনের চেয়ে এখন নিরপেক্ষ সরকারই তাদের কাছে মুখ্য। কারণ; এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন তারা আশা করেন না। এ কারণে আন্দোলনকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন। বর্তমান আওয়ামী লীগের সরকারের মেয়াদের শেষ বছরের সিলেট আওয়ামী লীগে চলছে নির্বাচনের প্রস্তুতি। সিটি নির্বাচনের পর পরই নেতারা জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ভাবতে শুরু করেছেন।
এলাকার মন্ত্রী ও এমপিরাও এলাকামুখী হয়েছেন। মর্যাদা সিলেট-১ আসনে ২০১৮ সালে এমপি নির্বাচিত হয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছেন ড. একে আব্দুল মোমেন।
গত ৫ বছর তিনি সিলেটের উন্নয়নের চেয়ে মন্ত্রণালয় নিয়ে বেশি ব্যস্ত থেকেছেন। তবে মন্ত্রী হওয়ার প্রথম বছরে বেশকিছু কাজ তিনি শুরু করেছিলেন। এগুলো এখনো শেষ হয়নি। এ কারণে গত মাসে মন্ত্রী সিলেট উন্নয়ন সম্পর্কিত এক সভায় এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সম্প্রতি সময়ে সিলেটে মন্ত্রী ঘন ঘন আসা-যাওয়া করছেন। সিলেট-৪ আসনের এমপি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। মন্ত্রী হওয়ার পর থেকে এলাকার উন্নয়নে তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
এমপি থাকার সময় তিনি যেভাবে এলাকায় সময় দিতো সেভাবে এখন আর দিতে পারছেন না স্থানীয় নেতাদের অভিযোগ। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি এলাকামুখী হয়েছেন। ছুটে যাচ্ছেন তৃণমূল পর্যন্ত। এ ছাড়া সিলেট-৩ আসনের এমপি হাবিবুর রহমান হাবিব, সিলেট-৬ আসনের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এলাকায় আসা-যাওয়া করছেন। তবে সিলেট-৫ আসনের এমপি হাফিজ আহমদ মজুমদার মাঠে অনুপস্থিত রয়েছেন। তার প্রতিনিধি এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধি দিয়ে উন্নয়ন কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। সিলেট-২ আসনে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী নির্বাচনের জন্য মাঠ পর্যায়ে কাজের গতি বাড়িয়েছেন।
তিনি জানিয়েছেন- আওয়ামী লীগ গণমুখী দল। এ কারণে জনগণই সব। নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের উন্নয়ন, অর্জনকে মানুষের কাছে তুলে ধরার নির্দেশনা আমরা পালন করছি। এরপর দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো। নির্বাচনের জন্য সিলেট আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি আছে বলে জানান তিনি। এদিকে- ভোটার নিয়ে চিন্তিত নয় সিলেট বিএনপি’র নেতারা। তারা জানিয়েছেন- ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাত্র ১/২ ঘণ্টার সুষ্ঠু ভোটে তারা চমক দেখিয়েছিলেন।
এ ছাড়া নগরেও রয়েছে তাদের ভোট ব্যাংক। পর পর দুইবার সিলেট নগর থেকে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতা আরিফুল হক চৌধুরী। এবার সিটি নির্বাচনে ভোট বর্জন করেন আরিফ। ফলে সিলেট বিএনপি’র নেতারা এবার আর নির্বাচন নিয়ে ভাবছেন না। তারা আন্দোলনের মাধ্যমেই সরকার পতন চান। এজন্য সিলেট বিএনপি’র নেতারা সকল ভেদাভেদ ভুলে এক কাতারে এসে আন্দোলনে নেমেছেন। এতদিন ঝিমিয়ে থাকা নেতারাও রাজনীতির মাঠে সরব হয়েছেন।
বিএনপি শুধু জাতীয় নির্বাচনই নয়, স্থানীয় সকল নির্বাচনও তারা বর্জন করে। যারা দলের সিদ্ধান্ত না মেনে প্রার্থী হয়েছিলেন তারা অনেকেই ফলাফল ঘরে তুলতে পারেনি। চলতি বছরের ২১শে জুনে অনুষ্ঠিত হওয়া সিলেট সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর পদে এই দৃশ্য পরিলক্ষিত হয়েছে। বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন গতকাল বিকালে মানবজমিনকে জানিয়েছেন- বিএনপি নির্বাচনে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু হয়নি- এটা প্রমাণিত। সুতরাং নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া নির্বাচন কখনোই সুষ্ঠু হবে না। এজন্য গোটা দেশের মতো নির্বাচন নিয়ে ভাবছেন না। সিলেট বিএনপি’র সর্বস্তরের নেতারা আন্দোলনে রয়েছেন। এবং সরকারের পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত সবাই আন্দোলনের মাঠে থাকবেন বলে জানান তিনি।