উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও ভারি বর্ষণে বৃদ্ধি পেয়েছে কুশিয়ারা নদীর পানি।
আব্দুল্লাহ আল নোমান
প্রকাশিত হয়েছে : ৪:৩৯:২৩,অপরাহ্ন ১৫ জুলাই ২০১৯ | সংবাদটি ৫৫৯ বার পঠিত
সিলেটের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও ভারি বর্ষণে বৃদ্ধি পেয়েছে কুশিয়ারা নদীর পানি। তবে সুরমার পানি কিছুটা কমলেও বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। এ নদীর সবকটি পয়েন্টে এখনো বিপদসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
সুরমার পানি উপচে সিলেট নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকা তলিয়ে গেছে। বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শুরুর দিকে জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ এবং কানাইঘাট উপজেলার কিছু এলাকা প্লাবিত হলেও এখন জেলার সবকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পাশাপাশি জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জের কিছু এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দেয়া আতঙ্কে দিন পার করছেন নদী তীরের মানুষ।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে পাওয়া তথ্যমতে, রোববার সন্ধ্যা ৬টায় কুশিয়ারা নদীর আমলশীদ পয়েন্টে বিপদসীমার ১৫৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। একই সময়ে শেওলা পয়েন্টে ১০০ সেন্টিমিটার এবং শেরপুর পয়েন্টে ৪৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
এ ছাড়া সুরমার কানাইঘাট পয়েন্টে ১৩০ সেন্টিমিটার, সিলেট পয়েন্টে ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং জৈন্তাপুরের সারী নদীর সারী পয়েন্টে ৫৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। যেখানে শনিবার সুরমার কানাইঘাট পয়েন্টে ১৫৭ সেন্টিমিটার ও সিলেট পয়েন্টে ৬৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
সংশ্লিষ্ট উপজেলায় কর্মরত সংবাদকর্মীরা জানান, সুরমা এবং সারীর পানি কিছুটা কমলেও বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত আছে। গোয়াইনঘাট এবং কানাইঘাট উপজেলা সদরের সঙ্গে জেলা সদরের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি উঠে যাওয়ায় রোববার তা বন্ধ ছিল। পানি ধীর গতিতে নামায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে সময় লাগতে পারে।
প্লাবিত এলাকায় তলিয়ে গেছে আমনের বীজ তলা, মাছের খামার। এ কারণে ক্ষতিতে পড়ার শঙ্কায় রয়েছেন কৃষক ও খামারিরা। প্লাবিত এলাকায় বন্যার্তদের মাঝে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।
পানি উঠেছে সিলেট নগরেও। নগরের উপশহর, মাছিমপুর, কালিঘাটসহ নদী তীরের কয়েকটি এলাকায় শুক্রবার দিবাগত রাত থেকে পানিতে তলিয়ে যায়। যে কারণে এসব এলাকার বহুতল বাসভবনের নিচতলায় বসবাসরত বেশিরভাগ বাসিন্দারা বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন অন্যত্র। বন্ধ হয়ে গেছে উপশহর বালিকা বিদ্যালয়। প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার নগরীর মিরাবাজার জামেয়ায় খোলা আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে।
সিলেট জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা নুরুজ্জামান মজুমদার জানান, বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে এ পর্যন্ত ৫শ’ মেট্রিক টন চাল, নগদ ৮ লাখ টাকা এবং দুই হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে ৫০ মেট্রিক টন বন্যা কবলিত এলাকায় বিতরণ করা হয়েছে। প্রয়োজনে আরো ত্রাণ বরাদ্দ করা হবে বলে জানান তিনি।
রোববার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সিলেটের কানাইঘাট উপজেলায় ৬৩ মিলিমিটার, সিলেট সদরে ৯ মিলিমিটার, বিয়ানীবাজার উপজেলায় ৬০ মিলিমিটার এবং মৌলভীবাজারের শেরপুরে ৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।রাইজিংবিডি.কম